অনলাইনঃ
শুরু থেকেই বিভিন্ন সংকট নিয়ে পথচলা শুরু করা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মাঝে দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন, পরিবহন সংকট এবং মেডিকেল সেন্টার নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজমান ছিলো।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাহি সাম্যের গান মুক্তমঞ্চে আয়োজিত আলোচনা সভার প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ প্রদানকালে এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ডাঃ মোঃ মুরাদ হাসান এমপি।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে পরিবহন তার মন্ত্রণালয়ের অধীন না হলেও তিনি জনগণের সেবক হিসেবে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার দৃঢ়সংকল্প ব্যক্ত করে। তিনি বলেন, উপাচার্য মহোদয় চেষ্টা-প্রচেষ্টা নিলে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব। তিনি যদি মনে করেন এই বাস আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য যারা আগামীর বাংলাদেশ গড়বে, যারা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বে, যারা উন্নয়নশীল বাংলাদেশকে ২০১২ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবে, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়বে, তাদের জন্য উপাচার্য- শিক্ষকদের নিয়ে আমরা বাসের ব্যবস্থা করে দেবো।

স্বাগত বক্তব্য প্রদান কালে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মোঃ হুমায়ূন কবির প্রতিমন্ত্রীর কাছে একটি এম্বুলেন্স দাবি করেন। পরবর্তীতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ডিন মহোদয় দাবিকে সমর্থন দেন। এ দাবির প্রেক্ষিতে বক্তব্য প্রদানকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এম্বুলেন্স দিয়ে দেওয়া হলো, পেয়ে যাবেন, বুঝে নিবেন এপ্রিল মাসে।

এছাড়া মেডিকেল সেন্টারের ব্যপারে তিনি বলেন, আপনাদের মেডিকেল সেন্টারে কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, আধুনিকায়ন করা যায়, জানাবেন আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে প্রতিষ্ঠিত হলেও আয়তন কম হওয়ায় ডা. মোঃ মুরাদ হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ৫৬ একর জায়গা শুনে আমি খুবই অবাক হলাম। ইতিমধ্যে উপাচার্য আরও দেড়শ একর জায়গার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন। আমি বলেছি আমি মাননীয় উপাচার্যকে সাথে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জমি আদায় করে নেবো, আপনাদের সেবক হিসেবে পাশে থাকবো।

আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে, যে বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে তার মান, তার বিশালত্ব, তার পরিধি, ওরকম আকাশের মতো হবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

তিনি পরবর্তীতে যখন আসবেন, তখন যেনো দুইশত একরের কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে পারেন সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন৷ এজন্য সকলের কাছে সর্বাত্নক সহযোগিতা কামনা করেন। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ধমনীতে বিশুদ্ধ রক্ত ধারণ করেন বলেই শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে দাবিগুলোকে নিজের দাবি হিসেবে ব্যক্ত করেন। এসময় উপস্থিত সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা জানান।

এছাড়াও প্রতিবছর বীরাঙ্গনাদের প্রতি সম্মাননা প্রদানের বিষয়টির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ৪ জন বীরাঙ্গনার প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকার চেক, ফুল, ও শাড়ি প্রদানের মধ্য দিয়ে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান এর সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ-৭ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা রুহুল আমীন মাদানী, বীরপ্রতীক আনিছুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর মোঃ জালাল উদ্দিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সুব্রত কুমার দে, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড.মোঃ সাহাবউদ্দিন।

সকাল ১১টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানের শহীদদের প্রতি ‘চির উন্নত মম শির’ এ পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়।

দুপুর ১২টায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ ও ভলিবল প্রতিযোগিতা, ৩ টায় স্বাধীনতা দিবস আন্তঃবিভাগ বিতর্কের ফাইনাল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব কতৃক নির্বাচিত ২৬টি ছবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার বিপরীতে স্থিরচিত্র প্রদর্শিত হয়।
-ডিকে

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily