রাজনীতিঃ
জাতীয় ঐক্য গড়তে ডানপন্থি ও বামপন্থি সকল রাজনৈতিক দলকে সমবেত করতে চান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দেশে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনার আন্দোলনকে শক্তিশালী করার জন্য জাতীয় ঐক্যর উপর গুরুত্ব আরোপ করতে গিয়ে এ কথা বলেন।
সম্প্রতি দেশের চলমান রাজনীতি, বিএনপির পরিকল্পনা এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ নানা বিষয়ে দেশ রুপান্তর’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দলটির মহাসচিব এমন মন্তব্য করেন।
এ সময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিক হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাস, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে জানেন।
বাংলাদেশের কোনো সফল গণতান্ত্রিক আন্দোলন জাতীয় ঐক্য ছাড়া সংঘটিত হয়নি। এ জন্য একদিকে বামপন্থি এবং আরেকদিকে ডানপন্থি সবাইকে আমরা সমবেত করতে চাইছি।’
ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন সফল হয়েছিল জাতীয় ঐক্যের কারণে।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের বিজয় তো সর্বজনবিদিত। ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ এককভাবে জয়লাভ করেছে ঠিকই, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় এই দলটিকে সবার সঙ্গে ঐক্য করতে হয়েছে। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুঝেছিলেন সবাইকে এক না করলে দেশ পরিচালনা করা যাবে না। তাই তিনি বাকশাল গঠন করেছিলেন। অবশ্য এর পেছনের অন্তর্নিহিত কারণ ছিল একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করা।’
তিনি আরো বলেন, ‘১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন সফল হতো না, যদি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি না হতো। ১৫ দল এবং ৭ দলের যুগপৎ আন্দোলনের কারণে তা সফল হয়েছিল। এমনকি ১৯৯৬ সালে আমাদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করে আওয়ামী লীগ সফল হয়েছে, তার ভিত্তিও ছিল জাতীয় ঐক্য। ২০০৮ সালে তারা ক্ষমতায় এসেছে মহাজোট গঠন করে। এটাই বাংলাদেশের বাস্তবতা এবং চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছিলাম দুটি লক্ষ্য নিয়ে। এমনিতেই ঐক্যফ্রন্টের সাতটি দফা ছিল। প্রধান যে দুটি লক্ষ্য ছিল, তার মধ্যে প্রথম ছিল স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা। আরেকটি লক্ষ্য ছিল একটি অর্থবহ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। সে বিষয়টিকে আমরা বেশিদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারিনি। আমরা এমন একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলাম, যার ফলাফল সরকার আগের রাতেই লুট করে নিয়ে গেছে। সুতরাং আমরা সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারিনি।’
বিএনপির এ মহাসচিব আরো বলেন, ‘কিন্তু, আমরা ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে কিছু দাবিতে এখনো আন্দোলন করছি। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা কাজ করছি। আমরা আগের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আন্দোলন পরিচালনা করছি। এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পার্লামেন্ট এবং নতুন সরকার গঠিত হবে।’
-কেএম