শিক্ষাঃ
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন (এএসভিএম) অনুষদে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে অনুষদীয় ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ রিসিপশন, ওরিয়েন্টেশন এবং রোগ প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণের।
রবিবার (১ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল ভবনের সামনে দুই ইন্টার্নশিপ কো-অর্ডিনেটর ড. মো. আসাদুজ্জামানের ও ড. মাহফুজুল ইসলামসহ, সকল বিভাগীয় চেয়ারম্যান এবং শিক্ষকের উপস্থতিতে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে ইন্টার্নশিপের উদ্বোধন করেন এএসভিএম অনুষদের ডিন এবং ইন্টার্নশিপ প্রোগামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কেবিএম সাইফুল ইসলাম।
এরপরে অনুষদের সকল শিক্ষক এবং ইন্টার্ন শিক্ষার্থীগণ একটি বর্ণাঢ্য রেলি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করেন।
রেলি শেষে সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সেমিনার কক্ষে ইন্টার্ণদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এএসভিএম অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কেবিএম সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ইন্টার্ণশিপ রিসিপশন ও ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক ড. তুহিন শুভ্র রায়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্প্রসারণ বিভাগের পরিচালক ড. মো. শাহিনুর আলম।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের এগ্রো ভেট এন্ড ক্রপ কেয়ার ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার জয়ন্ত দত্ত গুপ্ত।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক চেয়ারম্যানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ইন্টার্নশিপ কো-অর্ডিনেটর ড. মাহফুজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অপর ইন্টার্নশিপ কো-অর্ডিনেটর ড. মো. আসাদুজ্জামান এবং বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোফাজ্জল হোসাইন।
বিকালে ইন্টার্ন শিক্ষার্থীদের নিয়ে রোগ প্রতিরোধ এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ক টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল বলেন, যেকোনো শিক্ষার্থীকে গ্রাজুয়েট হওয়ার জন্য ইন্টার্নশিপ খুবই প্রয়োজন।
তবে সকল বিষয়ে এখনো ইন্টার্নশিপের প্রচলন না থাকলেও ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য ইন্টার্নশিপ একটি ভালো সুযোগ।
দক্ষ ভেটেরিনারিয়ানদের হাত ধরেই দেশে আমিষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। নিরাপদ আমিষ চাহিদা মেটাতে তারা কাজ করছে।
আশাকরি শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে সব প্লেসমেন্ট থেকে ভালো কিছু শিখে আসবে, নতুন নতুন বিষয় হাতে কলমে শিখবে। সকল বাধা বিপত্তি কাটিয়ে এগিয়ে যাবে, একজন দক্ষ ভেটেরিনারি ডাক্তার হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে অংশ নিবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. কেবিএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে একজন ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীর কর্মজীবনের সূচনা হয়।
আমরা বারবার বিশ্লেষণ করে সবচেয়ে কার্যকর ও শিক্ষা বান্ধব প্লেসমেন্ট ঠিক করেছি যাতে আজকের ইন্টার্ণ আগামীর একজন দক্ষ ও বিচক্ষন ভেটেরিনারিয়ান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।
একজন ভেটেরিনারিয়ানের দায়িত্ব অনেক বেশি। প্রাণি চিকিৎসার পাশাপাশি একজন দক্ষ ভেটেরিনারিয়ান দেশ ও জাতির জন্য খাদ্য নিরাপত্তা এবং নিরাপদ খাদ্য যোগানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। তাই একজন ইন্টার্ণ ভেটকে আবশ্যই বাস্তব ও প্রায়োগিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ হতে হবে। আমরা আশাকরি আমাদের অনুষদ বাংলাদেশের একটি রোল মডেল হবে। আমাদের গ্রাজুয়েটরা তাদের কাজের মাধ্যমে এএসভিএম অনুষদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে আনবে।
এ প্রসঙ্গে অনুষদের ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী ভেট সায়েন্স এন্ড এএইচ ছাত্র পরিষদের ভিপি রাহাত মোল্লা বলেন, ভেটেরিনারি ইন্টার্ণশিপ প্রোগ্রামের গুরুত্ব ও সৌন্দর্য্য আজকের এই বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। ইতিপূর্বে ৬ টি ব্যাচ আমাদের অনুষদ থেকে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করলেও ইন্টার্ণশিপ প্রোগ্রামের এই রকম ব্যাপকতা ছিল না। বর্তমান ডিন স্যার একাডেমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের পাশাপাশি ইন্টার্ণদের হাতে-কলমে কাজ শেখার জন্য নানাবিধ প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন যা বাস্তবায়ন হলে আমাদের অনুষদ বাংলাদেশের ভেটেরিনারি শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
-শিশির