স্পোর্টসঃ লিওনেল মেসির সর্বকালের সেরা হবার পথে বিশ্বকাপকে কোনো বাধা বলে মনে করছেন না ব্রাজিলীয় কিংবদন্তী জিকো।
ব্যক্তিগত হোক কিংবা দলগত, ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার হয়ে এমন কোনো শিরোপা নেই যা মেসি জেতেননি। ঘরোয়া ফুটবল তাকে দু’হাত ভরে দিলেও আন্তর্জাতিক ফুটবল বার্সেলোনা তারকাকে ফিরিয়েছে শূন্য হাতে। মেসি খেলেছেন এমন চারটি বিশ্বকাপে তার দল আর্জেন্টিনার সাফল্য কেবল ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠাই।
ধারণা করা হচ্ছিলো ৩১ বছর বয়সী মেসির বিশ্বকাপ জেতার এবারই শেষ সুযোগ। কিন্তু এবার তার দল বিদায় নিলো শেষ ষোল থেকেই। পরের বিশ্বকাপে চলাকালীন সময়ে তার বয়স হবে ৩৫, তাই পাঁচবারের ব্যালন ডি অর জয়ীর বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনাটা আপাতদৃষ্টিতে ফিকেই মনে হচ্ছে। তবে সাবেক ব্রাজিল ফরোয়ার্ড জিকোর মতে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে বিশ্বকাপ জেতার প্রয়োজন নেই মেসির।
নিজের খেলোয়াড়ি জীবনেও বিশ্বকাপের সোনার হরিণে হাত ছোঁয়াতে পারেননি জিকো। সমপ্রতি অমনিস্পোর্টসকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন,‘না এটা কোনোপ্রকার হতাশা থেকে বলছি না। এখনকার যুগে মানুষ কেবল অর্জনের কথাই ভাবে। আমি মনে করি আপনার ক্যারিয়ার, আপনার কাজটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
জিকো মনে করেন দলগত ব্যর্থতার ভার ব্যক্তির উপর চাপিয়ে দেয়া অনুচিত। তিনি বলেন,‘ফুটবল একটি দলগত খেলা এবং বেশিরভাগ সময় তা আপনার একার ভালো খেলার উপর নির্ভর করে না। নির্ভর করে দল ভালো খেলছে কিনা তার উপর। কখনো সখনো আপনি একা একটা ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন কিন্তু আপনি পুরো প্রতিযোগিতার নির্ধারক হয়ে যেতে পারবেন না। আর তাই বিশ্বকাপ না জেতার কারণে মেসির যোগ্যতা একটুও কমে যাবে না। ইয়োহান ক্রুইফ কোনো বিশ্বকাপ জেতেনি এবং সে ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় আর সে সেখানে সবসময়ই থাকবে।’
জিকোর মতে- দলকে ব্যক্তিগত সাফল্যের উপর প্রাধান্য দেয়ার প্রবণতাই মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা এনে দিয়েছে। জিকোর ভাষায়: ‘মেসি এবং রোনালদো দুজনেই কখনও দলের জন্য খেলা বন্ধ করে না। আমি যদি আজ তরুণ হতাম তবে তারা সেই খেলোয়াড় যাদের মতো হতে চাইতাম। তাদের মানের খেলোয়াড় হতে চাইতাম, দলের জন্য খেলতে চাইতাম।’
তিনি আরও বলেন,‘সেরারা বাকি সবাইকে ছাপিয়ে যাওয়ার জন্য নিজেদের তৈরি করেন বলেই তারা সেরা হন। আপনি তাদেরকে অহেতুক ঘোরাফেরা করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় দেয়া কিংবা পার্টিতে যোগ দেয়ার জন্য অনুশীলনে না যেতে দেখবেন না। ব্যক্তিগতভাবে সেরাটা দেয়ার জন্য তারা নিজেদের যথেষ্ট যত্ন নেন, কিন্তু তারা জানেন সেটা দলের জন্যেও কল্যাণ বয়ে আনে।