মাষ্টার জায়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তৈরী হচ্ছে লাল মঞ্চ

অনলাইনঃ
মাষ্টার জায়ানের নিষ্পাপ মুখ আবারও একবার ডাক দিয়েছে বিশ্বসম্প্রদায়কে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে, পৃথিবীর নির্মমতা আর কঠিন বাস্তবতা বুঝে ওঠার আগেই ঘাতক বোমার স্প্লিন্টারে না ফেরার দেশে শিশু জায়ান চৌধুরী।

শিশু জায়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীর চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে প্রস্তুত হচ্ছে লাল কার্পেটের মঞ্চ।

গতকাল (রোববার) শ্রীংকায় ঘটে যাওয়া সিরিজ বোমা হামলায় নিহতের তালিকায় ৮ বছরের বাংলাদেশের ছোট্ট এ শিশুটি।

বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে নিথর শরীরে শেষবারের মতো স্বদেশের মাটিতে ফেরা অপেক্ষায় জায়ান। দেশের ১৬ কোটি মানুষের হৃদয়কে নাড়া দেয়া তার নিষ্পাপ চেহারা আবারও একবার ডাক দিয়েছে বিশ্বসম্প্রদায়কে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।

বুধবার শ্রীলংকা থেকে শিশু জায়ানের লাশ বহনকারী বিমান ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। অবতরণের সম্ভব্য সময় বলা হচ্ছে সকাল সাড়ে ১১ থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে।

এয়ারপোর্ট থেকে জায়ানের লাশ সরাসরি নিয়ে আসা হবে বনানী ২ নম্বর রোডের চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে। সেখানেই ১৬ বাই ১২ ফুট লাল কার্পেটের মঞ্চে রাখা হবে তাকে। এখানেই তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। বিকালে জানাজার সর্বশেষ প্রস্তুতি দেখে গেছেন ঢাকা-১৭ আসনের সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) এমপি। এসময় তিনি জানাজা অনুষ্ঠান সফলভাবে শেষ করতে নানা দিক নির্দেশনা দেন।

গরম বিবেচনায় জানাজায় অংশ নিতে আসা জনসাধারণের কষ্ট লাঘবে প্যান্ডেল নির্মাণ এবং পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন তিনি।

আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) এমপি ঘুরে যাওয়ার পরই ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠ পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম শুরু করে৷ মাঠে প্যান্ডেলের খু্ঁটি খাটানোর কাজের পাশাপাশি প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে।

দেশে এই প্রস্তুতির সময় জায়ানের পিতা মশিউল হক চৌধুরী আহত অবস্থায় শ্রীলঙ্কায় চিকিৎসাধীন, সন্তানের শেষ যাত্রায় থাকতে পারবেন কিনা সন্দেহ। আর সন্তানের মৃত্যুর সময় একই হোটেলে অবস্থান করা মা কাটাচ্ছেন চরম সময়। বাবা-মায়ের পাশাপাশি আদরের এ নাতিকে হারিয়ে প্রায় বাকরুদ্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

ছোট নাতিকে শেখ সেলিম সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন বলে জানা গেছে। তাই মেয়ের পরিবারের সকলকে রেখেছিলেন নিজের সঙ্গেই। বনানীর ২ নম্বর রাস্তার ৯ নম্বর বাড়িতে প্রতিদিন খেলায় মেতে থাকতেন।

গতকাল রাত থেকেই নিকট আত্মীয়-স্বজন, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরের মানুষ ছুটে এসেছিলেন তাকে সান্তনা দিতে। এই অবস্থার মাঝেই জায়ানের দাদা এম এইচ চৌধুরী (পারুল) এসেছিলেন শেখ সেলিমের বাসায় সান্ত্বনা দিতে।

আরও পড়ুনঃ

শেখ সেলিমের জামাতার দুই পা অকেজো!

গতকাল রোববার শ্রীলংকায় ৩টি গির্জা ও ৩টি হোটেলসহ মোট ৮টি স্থাপনায় সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। যাতে ২৯০ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়।যার একজন জায়ান চৌধুরী৷ জায়ানের বাবা মশিউল আহত হলেও নিরাপদে রয়েছেন তার মা এবং দুই ভাই।এ ঘটনার পরই গতকাল রাতেই শেখ সেলিমের স্ত্রী ও এক পুত্র শ্রীলংকা পৌঁছেছেন।

FacebookTwitter