বিনোদনঃ একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী গত রাতে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে চারটায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সিঙ্গাপুর থেকে এ তথ্য শিল্পীর পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুর নেওয়ার দুই দিন পর সুবীর নন্দীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও এরপর অবনতি হতে থাকে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরপর তিনবার হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন তিনি।

ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও একবার হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছিল।

উন্নত চিকিৎসার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সাত দিন আগে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় একুশে সুবীর নন্দীকে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের এমআইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

শিল্পী সুবীর নন্দী দীর্ঘ ৪০ যাবৎ আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রেও উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান।

১৯৮১ সালে তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ বাজারে আসে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে।

সুবীর নন্দী প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আবদুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি।

আর চলতি বছরে সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করেছে কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীকে।

এ ছাড়াও তিনি তিনি মহানায়ক (১৯৮৪), শুভদা (১৯৮৬), শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), মেঘের পরে মেঘ (২০০৪) ও মহুয়া সুন্দরী (২০১৫) চলচ্চিত্রের গানে কন্ঠ দিয়ে পাঁচবার এই পুরস্কার লাভ করেন।

সুবীর নন্দী হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় নন্দী পাড়া নামক মহল্লায় এক কায়স্থ সম্ভ্রান্ত সঙ্গীত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।
তার নানা বাড়ি শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাদে আলিশা গ্রামে. তার পিতা- সুধাংশু নন্দী ছিলেন একজন চিকিৎসক ও সঙ্গীতপ্রেমী। তার মা পুতুল রানী চমৎকার গান গাইতেন কিন্তু পেশদারিত্বে আসেননি।

ছোটবেলা থেকেই তিনি ভাই-বোনদের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নিতে শুরু করেন ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে। তবে সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি মায়ের কাছেই।[৪] বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশবকাল চা বাগানেই কেটেছে। পাঁচ-ছয় বছর বয়স পর্যন্ত বাগানেই ছিলেন। চা বাগানে খ্রিস্টান মিশনারিদের একটি স্কুল ছিল, সেখানেই পড়াশোনা করেন। তবে পড়াশোনার অধিকাংশ সময়ই তার কেটেছে হবিগঞ্জ শহরে। পড়েছেন হবিগঞ্জ গভঃ হাইস্কুলে। তারপর হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে।

১৯৬৩ সালে তৃতীয় শ্রেণী থেকেই তিনি গান করতেন। এরপর ১৯৬৭ সালে তিনি সিলেট বেতারে গান করেন।

-ডিকে

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily