সারাদেশঃ

টাঙ্গাইলে এক প্রবাসীর স্ত্রীর বিবস্ত্র ভিডিও এবং আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম মঞ্জুর রহমান। ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এই অপকর্ম করেন তিনি।

জেলার মির্জাপুর উপজেলায় এই ঘটানা ঘটে। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শিশুসন্তান নিয়ে স্বামী সংসার ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে যেতে হয় ওই গৃহবধূকে। এমনকি গ্রামের মাতব্বরদের কাছে অভিযোগ করেও সুবিচার না পেয়ে অবশেষে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, তার স্বামী বিদেশ থাকায় হাড়িয়া গ্রামের মঞ্জুর রহমানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যান ওই গৃহবধূ। এরপর ফাঁদে ফেলে তার বাড়িতে গিয়ে গোপনে কৌশলে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাকে বিবস্ত্র করা হয়। ওই সময় ভিডিও করা হয় এবং আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। পরে গৃহবধূ তার ভুল বুঝতে পেরে মঞ্জুকে তার পথ থেকে সরে দাঁড়াতে বলেন। কিন্তু মঞ্জু তাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। এমতবস্তায় কয়েক দফায় পাঁচ লাখ টাকাও দেন তিনি। কিন্তু এরপরও বিদেশে যাওয়ার জন্য তার কাছে ৬ লাখ টাকা দাবি করেন মঞ্জু। অন্যথায় সব ভিডিও ও ছবি ভাইরাল করে দেয়ার হুমকিও দেয় তিনি।

তিনি আরো জানান, এতে রাজি না হলে প্রবাসে থাকা স্বামীকে ভিডিও ও ছবির কথা বলে দেয় মঞ্জু। এমনকি গৃহবধূর কয়েকজন আত্মীয়র ম্যাসেঞ্জারেও তা পাঠানো হয়। এতে করে সন্তান নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ওই নারী। একাধিকবার গ্রাম্যসালিশে ওই বখাটেকে শাস্তি দেয়া হলেও সংশোধন হয়নি। উল্টো আরো কয়েকজনকে ভিডিও ও ছবি পাঠায় মঞ্জু। যার ফলে এক প্রকার বাধ্য হয়ে শিশুসন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হন ওই গৃহবধূ।

প্রবাসীর স্ত্রী আরো জানান, তাই মির্জাপুর থানায় মামলা করতে চান তিনি। কিন্তু ভাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন এবং এলাকার কয়েকজন মাতব্বর বিষয়টি মীমাংসা করার কথা বলেন। এতে করে শুধু কালক্ষেপণ হয়, সমস্যার সমাধান হয় না। তাই গত ২১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জাপুর আমলি আদালতে প্রতারক মঞ্জুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন গৃহবধূ।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন জানান, এ ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানতে পেরেছেন। ওই ভিডিও এবং ছবিও দেখেছেন তিনি। এ বিষয়ে গ্রাম্যসালিশের তারিখও দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার আগেই ওই গৃহবধূ আদালতে মামলা করেছেন বলে তিনি জানতে পারেন।

এদিকে মামলা করার পর থেকেই মঞ্জু ও তার সহযোগীরা প্রবাসীর স্ত্রী এবং তার পরিবারকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত মঞ্জুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, প্রবাসীর স্ত্রী ও মঞ্জুর রহমান নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কারণে আপত্তিকর অবস্থার বিবস্ত্র ছবি ভাইরাল হয়েছে। ওই গৃহবধূ পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন। আদালত থেকে মামলার তদন্ত চেয়েছেন। এখন তদন্তের কাজ চলছে। তদন্ত শেষ হলেই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

-কেএম

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily