ডেস্ক রিপোর্টঃ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দৃষ্টিতে পরিচালিত ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন দ্বারা পরিচালিত ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থ বছর সময়কালে সারা দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩৯টি উপজেলায় সর্বমোট ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে সুনামের সাথে প্রতিবন্ধী হাসপাতাল নামে পরিচিতি লাভ করেছে।

এসব কেন্দ্রে ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ এ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপি এর মাধ্যমে অটিজমে শিকার শিশু/ব্যক্তি এবং অন্যান্য ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের বিনামূল্যে নিয়মিত বিভিন্ন ধরণের থেরাপিউটিক সেবা প্রদান করছে।

এ ছাড়া হিয়ারিং টেষ্ট, ভিজুয়্যাল টেষ্ট, কাউন্সেলিং এবং বিনামূল্যে সহায়ক উপকরন হিসেবে কৃত্রিম অঙ্গ, হুইল চেয়ার, ট্রাই-সাইকেল, ক্র্যাচ, স্ট্যান্ডিং ফ্রেম, সাদাছড়ি, এলবো ক্র্যাচ ইত্যাদি প্রদানের মাধ্যমে তাদের চলনক্ষম করে তোলা হচ্ছে।

বিগত ২ এপ্রিল ২০১০ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুভ উদ্বোধন করেন। দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলে দুঃস্থ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের ফিজিওথেরাপি সেবা পৌছে দেওয়ার জন্য ৩২টি মোবাইল থেরাপিভ্যান নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সেবা দানের ফলে সাফল্য অর্জনের হার অনেক বেশি।

একই সাথে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে তাঁদের নির্দেশনামতে নানামূখী উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। উন্নয়ন মেলা; তথ্য মেলা; ডিজিটাল মেলায় সেবা ক্যাটাগরীতে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রথম স্থান , দ্বিতীয় স্থান এবং তৃত্বীয় স্থানও অধিকার করেছে। এ সকল কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে সরকারের মূললক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রকে রাজস্বকরন করে স্থায়ীরূপ দেওয়া একান্ত প্রয়োজন হয়ে দাড়িয়েছে।

অন্যথায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা জনগন এ সেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারে।

প্রতিটি সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে ১২জন জনবলের পদ রয়েছে। সেই হিসেবে ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে ১,২৩৬ জনজনবলের পদ রয়েছে। এ সকল কেন্দ্রের জনবল সরকারীবিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও দীর্ঘদিনযাবৎ কোন প্রকার বর্ধিত বেতন (ইনক্রিমেন্ট), শ্রান্তিবিনোদন ছুটি ও ভাতা না থাকায় একই বেতন ও ভাতায় (সাকূল্য বেতনে) কর্মরত আছেন বিধায় তাদের মধ্যে বর্তমানে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

বর্তমানে কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনেকের সরকারী চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমাও শেষ হয়ে গেছে।

প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে কর্মকর্তা কর্মচারীগণ স্ব স্ব ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষিত (স্নাতোকত্তর/৪ বছরের ডিপ্লোমাধারী)।

প্রতিটি কর্মকর্তা কর্মচারীর উপর একাধিক পরিবার/পারিবারিক সদস্য নির্ভরশীল। বর্তমান সাকূল্য বেতনে কর্মরত থেকে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কর্মকর্তাকর্মচারীদের ভবিষ্যত চাকুরীর নিশ্চয়তানা থাকায় তারা হতাশায় ভূগছেন।

২০০৯ সালে সেবা কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হলেও অদ্যবধি তেমন কোন কার্যকর অগ্রগতি হয়নি।

এজন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ও জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন দ্বারা বাস্তবায়িত প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র শীর্ষক কর্মসূচী এবং ” Promotion of Services and Opportunities to the Disabled Persons in Bangladesh” শীর্ষক প্রকল্পে কর্মরত সকল জনবল জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন থেকে বের হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অন্য যেকোন বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, দপ্তর দ্বারা পরিচালিত ও বাস্তবায়িত হতে চায়।

কেননা আমাদের সকল জনবলের স্বপ্ন প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কর্মরত সেবকদের চাকুরী রাজস্বতে অন্তর্ভুক্ত হবে।

যেহেতু জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন সরকারের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত, সোস্যাল রেজিষ্টার ্অ্যাক্ট ১৮৬০ অনুসারে নিবন্ধিত ও পরিচালিত, সরকারের বিশেষ অনুদানের মাধ্যমে ( সীড মানি) সকল কার্যক্রম পরিচালিত করে। যে কারণে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের জনবলের চাকুরী রাজস্বকরনের ক্ষেত্রে আইনী সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন ২০১৬ ইং সালের পর থেকে অদ্যবধী অর্থমন্ত্রণালয় জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে উক্ত জনবলকে রাজস্বে স্থায়ী করার জন্য তাগিদপত্র দিয়ে আসছেন। জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন তার আইনী জটিলতার কারণে বাস্তবে রুপ দিতে পারছেন না। জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন থেকে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কর্মরত জনবল এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করা হয়। বদলী, কারন দর্শানো পত্র প্রেরণ, বিভাগীয় মামলা তাদের খোড়া অজুহাতের বহি:প্রকাশ। যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন সারা দেশে সকল উপজেলায় প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, যা জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এর সক্ষমতার বাহিরে। বিভিন্ন সহায়ক উপকরন, থেরাপিউটিক যন্ত্রপাতি, প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে গবেষণা নীতি প্রনয়ন এবং সরকারের উন্নয়নের গতি বাড়াতে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব না।

প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র শীর্ষক কর্মসূচী এবং ” Promotion of Services and Opportunities to the Disabled Persons in Bangladesh” শীর্ষক প্রকল্পে কর্মরত সকল জনবল জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন থেকে আলাদা করে সামজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যেকোন দপ্তরে অন্তর্ভুক্ত করে চাকুরী রাজস্বকরনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

আরও পড়ুন:

জানা গেছে এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকেরই বিভাগীয় মামলা, শোকজ, বরখাস্তের মত অমানবিক শাস্তি পেতে হয়েছে। বেশ কয়েকবছর যাবত আন্দোলনকারীরা তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের পরও থেমে নেই তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম।

-শিশির

FacebookTwitter