অনলাইনঃ
১৫ জুন, ২০২৩, ঢাকা, বাংলাদেশ: দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে বিগত মে মাসের শেষ সপ্তাহে পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারায় স্থাপিত এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট।
এরপর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ ৩০০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে গেছে।
সফলভাবে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রক্রিয়ার সমাপ্তির পর পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ৮ই জুন সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয় ও কমিশনিং কার্যক্রম শুরু করা হয়, যেন দ্বিতীয় ইউনিট এর উৎপাদন কার্যক্রম যথাসময়ে শুরু করা যায়।
আসন্ন ঈদ-উল-আযহার পর পাওয়ার প্ল্যান্টটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। তবে জনগণের বিদ্যুৎ ভোগান্তি কমাতে আগামী ২০ জুন নাগাদ পুনরায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর চেষ্টা করবে এসএস পাওয়ার কর্তৃপক্ষ।
এখানে উল্লেখ্য যে- জাতীয় গ্রিডে নেট ১২২৪ মেগাওয়াট সমপরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির দুইটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত কয়লার সরবারহ ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করা হয়েছে। যার প্রথম চালান ১৮ তারিখের মধ্যেই চলে আসবে এবং আরো একটি চালান এ মাসের শেষে আসবে।
এখানে উল্লেখ্য যে, প্রকল্প ঋণের অংশ হিসেবে প্রায় ৭ লক্ষ টন কয়লা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই চলে আসবে। এসএস পাওয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাওয়ার প্ল্যান্টটিতে কয়লার সংকট নেই বরং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর গ্রিড সঞ্চালন ক্ষমতা উন্নয়নের পর পূর্ণমাত্রায় কমিশনিং কার্যক্রম শুরু হবে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাথে বাস্তবায়িত পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (পিপিএ) এবং বাংলাদেশ সরকার ও পিজিসিবি সাথে বাস্তবায়িত ইমপ্লিমেন্টেশন এগ্রিমেন্ট (আইএ) অনুযায়ী উৎপাদিত বিদ্যুৎ কার্যকরভাবে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
এ প্রসঙ্গে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মোঃ ইবাদত হোসেন ভুইয়া এফসিএ, চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার, বলেন, “আমরা সফলভাবে প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি এবং দ্বিতীয় ইউনিট এর টেস্টিং ও কমিশনিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
জ্বালানি হিসেবে কয়লার নির্বিঘ্নে সরবরাহ নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈদের পর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে, তবে চলমান পরিস্থিতিতে জনগণের বিদ্যুৎ ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে আগামী ২০ জুন নাগাদ পুনরায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ এর চেষ্টা করব আমরা।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসএস পাওয়ার এর বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধের ব্যাপারে প্রকাশিত সংবাদ এ তথ্যগত বিভ্রাট লক্ষ্য করেছি। এ বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি”।
প্রসঙ্গত, চীনের বিখ্যাত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সেপকো থ্রি এর যৌথ উদ্যোগে ২.৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার অর্থাৎ ২৮ হাজার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি নির্মাণ করেছে দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী এস. আলম গ্রুপ।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বেসরকারি এই মেগাপ্রজেক্টটি বাস্তবায়নের ফলে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা আরো সুদৃঢ় হবার পাশাপাশি শিল্প ও সেচ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। পাশাপাশি সরকার স্বলমূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় এবং সরবরাহ করে সাশ্রয় করতে পারবে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা।
-শিশির