অমর চাঁদ গুপ্ত অপু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকেঃ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার হাটবাজারে প্রচুর পরিমাণে নারিকেল ও আখের গুড়ের আমদানি হলেও দাম ক্রেতা সাধারণের বাইরে চলে গেছে।

ফলে পূজো পার্বনে নারিকেলের নাড়– দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো।

ইতোমধ্যে উপজেলার ৫৯ টি পূজা ম-পের প্রতিমা তৈরি, ম-প সাজসজ্জার কাজসহ পুরোদমে ঘরে ঘরে চলছে দেবীকে বরণ করার নানান আয়োজন।

রাত পোহালেই শারদ পূজো শুরু হবে। দুর্গাপূজায় মা দুর্গাকে হরেক রকমের ফলমূলে পাশাপাশি দিতে হয় নারিকেল ও নারিকেলের নাড়ু। শুধু মা দুর্গার জন্যই নয়, এ নাড়ুর আয়োজন বাড়ীতে আগত অতিথিদের আপ্যায়নেও রাখতে হয় নারিকেল নাড়ু। আরো রাখতে হয় ফলমূল, খৈ ও মুড়ির মোয়াসহ নানান প্রকারভেদে মিষ্টি। উপজেলার পৌরশহরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে বিপুল পরিমাণ নারিকেল ও আখেড় গুড়ের আমদানি হচ্ছে। তবে নারিকেলের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন বিত্তের নাগালের বাহিরে চলে গেছে।

পৌরবাজার ঘুরে জানা যায়, বাজারে নারিকেলের দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। গত পূজায় এক জোড়া নারিকেলের দাম ছিল আকার ভেদে ৯০থেকে ১২০ টাকা। সেই নারিকেল এ বছর বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা জোড়া। এদিকে বেড়েছে আখেড় গুড়েরও দাম। গতবছর প্রতিকেজি আখেড় গুড়ের দাম ছিল ৭০-৮০ টাকা, সেই গুড় এবছর বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়।

নারীকেল ও গুড়ের খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আড়তে নারিকেলের দাম বেশি হওয়ায় এখানেও দাম বেশি হয়েছে।

পৌরএলাকার সুজাপুর গ্রামের প্রদীপ রায় ও কাঁটাবাড়ী গ্রামের মিনা রানী বলেন, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে সংসারে অন্য মাসের তুলনায় অভাব দেখা দেয়। কিন্তু যতই অভাব হোক না কেন, মা দুর্গার পূজায় ফলমূল, মোয়া, নাড়–, নারিকেল দিতেই হয়। কিন্তু বাজারে নারিকেল বেশি মূল্যে কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকদের। গত বছরের চেয়ে এ বছর নারিকেলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। বেড়েছে গুড়ের দাম। প্রশাসনের উচিৎ বাজার মনিটরিং করা।

পৌর বাজারের কেন্দ্রীয় কালী মন্দির সংলগ্ন নারিকেল বিক্রেতা মো. রাশেদ ও তারেক ইসলাম বলেন, পূজা উপলক্ষে খুলনার বাগেরহাট থেকে নারিকেল এনে মজুত করেছেন। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিসহ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য বর্তমানে নারীকেল ও গুড়ের দাম বেড়েছে।

উপজেলা শাখা বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব প্রধান শিক্ষক ধীমান চন্দ্র সাহা ও যুগ্ম আহবায়ক আনন্দ গুপ্ত বলেন, এ বছর উপজেলায় ৫৯টি ম-পে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে। অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়েই পূজো শুরু এবং শেষ হবে বলে তারা দাবি করেন।

-শিশির

FacebookTwitter