আলহাজ্ব বুলবুল চৌধুরী, পত্নীতলা থেকেঃ
নওগাঁর পরেই জেলায় অবস্থানকারী অতি গুরুত্বপূর্ন পত্নীতলা উপজেলা সদর নজিপুর বাসস্ট্যান্ডের নজিপুর-মহাদেবপুর সড়ক, নজিপুর-ধামইরহাট সড়ক সহ অন্যান্য সড়ক গুলির বেহাল অবস্থা।
প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। এসব এলাকার সড়কের পাশে অবৈধ দখলদারদের দখলকৃত সওজের জায়গা গুলি পূনঃ উদ্ধার সহ সড়ক প্রশস্ত করণ ও সড়ক পূনঃ নির্মান সময়ের দাবী হয়ে উঠেছে।
নজিপুর-মহাদেবপুর সড়কের পত্নীতলা সীমানার পার্বতীপুর পর্যন্ত এবং নজিপুর-ধামইরহাট সড়কের বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে নজিপুর-সাপাহার সড়কে একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের উপরে ওঠে হাটু পরিমান পানি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন নজরদারী না থাকায় এলাকাবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক গুলি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সংশ্লি-ষ্ট বিভিন্ন দপ্তরকে অবহিত করেও কোনো লাভ হয়নি।
এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের হুকুম দখল করা বেদখল যায়গা গুলি অবৈধ ভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মান করেছে অবৈধ দখলদাররা।
এসব অবৈধ দখলদারদের কেউ কেউ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আদালত থেকে একতরফা স্থগিতাদেশের রায় নিয়ে যায়াগা গুলিতে বানিজ্যিক ভবন তৈরী করে বছরের পর বছর নিজ দখলে রেখে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এতে করে বাসস্ট্যান্ড থেকে পুঁইয়া মোড়, বাসস্ট্যান্ড থেকে চকনিরখীন (ঠুকনিপাড়া) মোড়, বাসস্ট্যান্ড থেকে বেঙডম মোড়, বাসস্ট্যান্ড থেকে পত্নীতলা বাজার মোড় পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়কের প্রসস্ততা সংকীর্ন হয়ে এসেছে।
ফলে পথচারীরা চলাচল করেন এখন প্রধান সড়কের উপর দিয়ে। এতে করে যানবাহন সহ পথচারীরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্য দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করতে হচ্ছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, নজিপুর-ধামইরহাট সড়কের নজিপুর বাসস্ট্যান্ড গোল চত্বর এলাকা থেকে ১৪বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত, নওগাঁ সড়কের পার্বতীপুর মোড় পর্যন্ত, সাপাহার সড়কের পত্নীতলা বাজার পর্যন্ত ও বদলগাছী সড়কের ভাবিচা মোড় পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ (সওজ) এর যায়গা গুলো সহ নজিপুর পৌরসভা এলাকার সড়কের পাশ গুলো ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করায় অত্র এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা একে বারেই বন্ধ হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টির পানিতেই সড়কের উপর পানি জমে যায়। এসব যায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মান ও দোকানপাট সহ বিভিন্ন সামগ্রী সড়কের উপর রাখছে অবৈধ দখলকারীরা। বাসস্ট্যান্ড গোল চত্বর থেকে চতুর্দিকে এসব সড়কে ওয়েল্ডিং কারখানা, বঙ্গা কারখানা, স-মিলের কাঠ, গাছের গুল, বাসা-বাড়ি তৈরীর ইট, বালু, মেসিনারীজ দোকানপাটের মালামাল দিনের বেলায় লোড, আনলোড করা সহ সড়কের উপর বিভিন্ন দোকানপাট গড়ে ওঠায় যানবাহন সহ পথচারী চলাচল হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। গোল চত্বরের আশেপাশের চারটি সড়কের ফুটপাতের বেশির ভাগ অংশ হকার-ব্যবসায়ীদের দখলে। আছে পান, সুপারী, দই-মিষ্টি, চটপটি-ফুচকা, চা-খাবারের দোকান, ফলের দোকান, মাছের দোকান। অন্যদিকে বাস সহ ব্যাটারী চালিত চার্জার (ইজি বাইক), বিক্সা, ভ্যান সংকির্ন সড়কের উপর দাড়িয়ে থেকে আরেক ভোগান্তির সৃষ্টি করেছে। এসব অবৈধ দখলদারদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হকারদের দোকান-পাট ও বাস, ট্রাক সহ ব্যাটারী চালিত চার্জার (ইজি বাইক), বিক্সা, ভ্যানের কারণে ফুটপাত দিয়ে পথচারীদের হেঁটে যাওয়ার সুযোগ নেই। বেশির ভাগ পথচারী প্রধান সড়কের উপর দিয়ে হাঁটছেন। প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারী না থাকায় এসব অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাটের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলেছে। এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন সভায় আলোচনা হলেও আদৌও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
নজিপুর বাসস্ট্যান্ড গোল চত্বর দিয়ে পাশ্ববর্তি সাপাহার-পোরশা-ধামইরহাট উপজেলার কয়েক হাজার যানবাহন রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন দিবারাত্রী চলাচল করে থাকে। এবাদেও উওরাঞ্চলের পঞ্চগড় দিনাজপুর থেকে রাজশাহী-নবাবগঞ্জের সাথে অতি সংক্ষেপে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা পতœীতলার নজিপুরের উপর দিয়েই।
এছাড়াও দেশের উদ্বৃত্ত ধান ও অন্যান্য পন্য উৎপাদন এলাকা হিসাবে পরিচিত নওগাঁ জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন উপজেলা পতœীতলা সহ পোরশা-সাপাহারের উৎপাদনকৃত ধান ও অন্যান্য পন্য বহনকারী ট্রাক সহ বিভিন্ন যানবাহন পতœীতলার নজিপুরের উপর দিয়েই চলাচল করে থাকে। নজিপুর চারমাথা গোলচত্বরের চারিদিকে সওজের বিশাল যায়গা থাকলেও সেগুলি অবৈধ ভাবে দখল হওয়ায় সংকীর্ণ হয়ে আসা সড়কের উপরই বাস দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করানো হয়। পথচারীদের চলাচল উপযোগী সড়ক সংস্কার সহ অতিসত্বর নজিপুর চারমাথা গোলচত্বর ও আশেপাশের এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে উর্দ্ধতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই সড়ক গুলি দিয়ে অধিক ঝুঁকি নিয়ে তাদের চলাচল করতে হয়। একই অভিযোগ করেন এই সড়কের নিয়মিত যানবাহন চালক ও স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ২০২০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত সড়ক গুলির কয়েক দফায় সংস্কারের কাজ হলেও উভয় পাশ থেকে সড়ক নিচু হওয়ায় পানি সড়কের উপর উঠে যায় এতে এই সড়ক গুলিতে বড় বড় খালা খন্দর হয়ে নিয়মিত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।
এবিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অতিসত্বর সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।
-শিশির