ডেস্ক রিপোর্টঃ
অতিথি নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত করছেন। আজ দ্বিতীয় দিন শনিবার (২৭ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সেখানে তাকে শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরের দ্বিতীয় দিনে বেশ কিছু কর্মসূচি রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে গণভবন থেকে রওনা হয়ে সকাল ৯টায় বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখান থেকে তিনি হেলিকপ্টারে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে টুঙ্গিপাড়া হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি। ১০টা ৪৫ মিনিটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভ্যর্থনা জানাবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
টুঙ্গিপাড়া-
সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতার সমাধিসৌধের বেদিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স পরিদর্শন করবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেখানে গাছের চারা রোপণ করবেন। দুপুর ১২টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ছাড়বেন।
যশোরেশ্বরী কালীমন্দির ও ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি-
এরপর তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যাবেন। সুন্দরবনঘেঁষা সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুরে যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে যাবেন নরেন্দ্র মোদি।
এরপর কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের হরিমন্দিরে পূজা করবেন এবং ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
নরেন্দ্র মোদির ওড়াকান্দি সফরকে অনেকটা রাজনৈতিক বলে মনে করছেন অনেকে। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচনে মতুয়াদের ভোট টানতে তিনি ওড়াকান্দি যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুর ১৮১২ সালে ওড়াকান্দিতে জন্মেছিলেন। তাই এর সঙ্গে মতুয়া সম্প্রদায়ের বিশেষ আবেগ জড়িত। মতুয়াদের একটা বড় অংশ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ও নদীয়া জেলায় বসবাস করে। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কোচবিহার ও বর্ধমানের কিছু এলাকায়ও আছেন অনেকে। সেখানকার ভোটের রাজনীতিতে তাদের প্রভাব রয়েছে।
প্রস্তুতি-
বাংলাদেশ ও ভারতের সরকারপ্রধানের আগমনকে কেন্দ্র করে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স ও ওড়াকান্দির ঠাকুরবাড়িতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। নেওয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির বৈঠক-
২৭ মার্চ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে দেশটির সঙ্গে ৩টি সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো দুর্যোগ মোকাবেলা সহযোগিতা। আর বাকি দুটি হলো- দুই দেশে ইনস্টিটিউটশনের মধ্যে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ে সহযোগিতা।
এরপর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর ঢাকা ছেড়ে যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।দুদিনের সফর শেষে ২৭ মার্চে রাতেই ঢাকা ছাড়বেন মোদি।
দুই দিনের সফরে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যান। এরপর দিনের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তিনি।
বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর যে বিশেষ আয়োজন ‘মুজিব চিরন্তন’ আয়োজনে যোগ দেন। ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী যৌথভাবে ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল এক্সিবিশনের’ পর্দা উন্মোচন করেন।
-কেএম