দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার অবরোধ

অনলাইন ডেস্কঃ

বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শাহবাগে অবস্থানরত ছাত্রছাত্রীরা আজকের মতো রাস্তা ছাড়লেন। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার অবরোধের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

আগামীকাল রোববার সকালে একই দাবিতে আবার সেখানে অবস্থান নেবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার দুপুর তিনটার দিকে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে করেন। এসময় তারা জানায়, নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ ও দোষী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে পুলিশি হামলার দায়ভার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এড়াতে পারে না। সেক্ষেত্রে হামলা চলতে থাকলে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও পদত্যাগও চাইতে বাধ্য হবো।

তারা বলেন, এছাড়া এভাবে একেরপর এক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকলে সড়ক ও জনপদ মন্ত্রীরও পদত্যাগ করতে হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলে বলেছেন, নৌমন্ত্রী বলেছেন শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগ চায়নি, আমরা বলতে চাই, তাহলে আমরা কারা।

তারা বলেন, দাবি আদায়ে বিষয়ে আমরা আশ্বাসে বিশ্বাসী না। ৯ দফার মধ্যে একটি হলো নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। সরকার ৯ দফা দাবি মেনে নিয়েছে কিন্তু বাস্তবায়ন করেনি। আমরা বাস্তবায়ন চাই।

উল্লেখ্য, ২৯ জুলাই (রোববার) রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। একই ঘটনায় আহত হন আরো ১০/১৫ জন শিক্ষার্থী।

নিহত দুই শিক্ষার্থী হলেন- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।

এ ঘটনায় নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেছেন। মামলা নম্বর- ৩৩।

এ ঘটনার পর থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে।

আন্দোলনরত শিক্ষাথীরা বলছেন, দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী বেপরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি ও নৌপরিবহন মন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তা ছাড়বেন না।

দাবিগুলো হলোঃ
দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী বেপরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রীকে পদত্যাগ ও নিঃশ্বর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্প্রিড ব্রেকার দিতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভর সরকারকে নিতে হবে। শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে- থামিয়ে তাদেরকে নিতে হবে। শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।

এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার অবরোধের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

আরবি

FacebookTwitter