অনলাইনঃ
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আজ শুক্রবার দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।

দলের অস্তিত্ব সংকট মুহুর্তে তার এমন সিদ্ধান্ত কেন এ বিষয়ে বিবিসি বাংলা’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ৩০ বছর জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। জামায়াতে থাকাকালীন ১৯৯২ সালে গোলাম আজমের নাগরিকত্ব মামলা এবং পরে সাঈদিসহ অনেক মামলা পরিচালনা করেছেন। এ ছাড়াও আমি নানা কূটনীতিক ইস্যু নিয়েও কাজ করেছি।

আমি আমার পদত্যাগ পত্রে বলেছি, ৩০ বছর আগে যখন আমি জামায়াতে যোগ দেই তখন আমি একটা ইচ্ছে নিয়ে এ দলের সাথে সম্পৃক্ত হই। ইচ্ছেটা হলো আমি জামায়াতকে নতুনভাবে সংস্কার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি ব্যার্থ।

আজ কেন জামায়াত জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। আজ কেন তারা এতো গ্লানি বয়ে বেড়াচ্ছে। ১৯৭১ সালে এবং এর পরে যারা জন্মেছে তারা তো এ সিদ্ধান্তের সাথে জড়িত না। কিন্তু আজ তাদেরও এর দায়ভার বহন করতে হচ্ছে। আমি তাদের বুঝিয়েছি স্বাধীনতার বিরোধিতা করে কোন দল সে দেশের নেতৃত্ব দিতে পারে নি। তখন আমার এ কথার পক্ষে কিছু লোক ছিলো আবার বিপক্ষেও ছিলো কিছু।

জামায়াতের একটা সংস্কৃতি আছে তা হলো জামায়েত দলের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা করে। এ কারণে একটা মিটিং-এ ৫০ জন উপস্থিতিতে কোন সিদ্ধান্ত অধিক ভোটে চূড়ান্ত হয়। এ কারনে সম্ভব হয়নি। আমি অনেক উদাহরণ দিয়েও বুঝাতে পারি নি।

২০১১ সাল থেকে দলটির ভার্চুয়ালি প্রায় সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জামায়াতের নিবন্ধন নেই। নির্বাচনের কোন প্রতিক নেই। তারা কোন কাজ করতে পারছেনা। আইনত দলটি বেআইনি না হলে সরকারের কাছে তারা একপ্রকার বেআইনিই বলা যায়।

আপনি কি কোন চাপে পড়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কোন চাপে পড়ে এ সিদ্ধান্ত নেই নি।

আপনি যদি এখনো দলের প্রধান হিসেবে থাকতেন তাহলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতেন কিভাবে? কি বলতেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছি যা আমাদের রাজনৈতিক একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো। আমরা জাতির কাছে নিঃশর্থ ক্ষমা চাচ্ছি।’

আমি মনে করি একটা রাজনৈতিক দল তার পিছনে ফিরে যদি দেখে তারা ভুল করেছে তাহলে তাদের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে কোন সংকোচ থাকা উচিত নয়।

অনুষ্ঠানে দর্শকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াতে জড়িত সবাই দেশ ও জাতিসহ সব ব্যাপারে অবগত, আমি আশা করি তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে। আমি দল থেকে অনেক চিন্তা ভাবনা করে পদত্যাগ করেছি এটা আমার জন্য অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত ছিলো। আর ফিরে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তিনি জানান, তিনি তার নিজের পেশায় ফিরে যাবেন এবং একজন নাগরিক হিসেবে একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য যা করার তা তিনি করবেন।

জামাতের মধ্যে সম্পৃক্ত যুব সমাজের উদ্দ্যেশে তিনি বলেন, ইসলামি রাষ্ট্রের যে ধারনা ছিলো সে ব্যাপারে এখন তাদের চিন্তা ভাবনা করা উচিত। মুসলিম বিশ্ব এখন অনেক পরিবর্তিত। তাই এটা নিয়ে তাদের নতুন করে গভীর ভাবে ভাবা উচিত।

জামায়াত বন্ধ হলে কোন দল সংকটে পড়বে কিনা জানিনা কিন্তু সময় হয়েছে জামায়েত কে বিলুপ্ত করার। এটা দেশ,জামায়াত সে সাথে জাতির জন্যও কল্যাণকর।

বিশ্বে এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে সুতরাং জামায়াতকেও তাদের চিন্তা ভাবনা পরিবর্তন করা উচিত। জামায়াতে কত পার্সেন্ট সদস্য আছে যারা আপনার মত দলের সংস্কার চায়?

তিনি বলেন, অনেকেই আছে যারা দেশের জন্য অর্থবহ অবদান রাখতে চান।
-ডিকে

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily