জাতীয় সংসদের সামনে আমরণ অনশনে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা

অনলাইনঃ

উপযুক্ত কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ছয় দফা দাবিতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ‘আমরণ অনশন’ করছেন উচ্চশিক্ষিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে সংসদের ১২ নম্বর ফটকের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করে ‘চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী গ্রাজুয়েট পরিষদ’। গত ৭ জুলাই থেকে লাগাতার বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে আসছিলেন তারা।

আন্দোলনকারী পরিষদের অহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী হুসাইন বলেন, ‘প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচির পরও কারও সাড়া না পাওয়ায় আমরা সংসদের এখানে চলে এসেছি।’

তাদের দাবিগুলো হলো- নবম থেকে ২০তম গ্রেডভুক্ত সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি চাকরিতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিশেষ ব্যবস্থায় নিয়োগ। গত ১৭ এপ্রিল প্রকাশিত বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের দশম গ্রেডভুক্ত ৩৮ নম্বর রিসোর্স শিক্ষক পদে নিয়োগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রুতিলেখক নীতিমালা ২৫-এর বি উপধারা অনুযায়ী সরকারিসহ স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্ত্বশাসিত ও বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় আইন মেনে চলার নিশ্চয়তা। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের স্মিতবাক ডিগ্রি অর্জনের পর চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা করে মাসিক বেকার ভাতা প্রদান।এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনরা আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিবছর একবার বিশেষ ব্যবস্থায় সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত, আধাস্বায়ত্ত্বশাসিত চাকরিতে নিয়োগ প্রদান। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সর্বস্তরের কাজের সুযোগ দেওয়া।

এদিকে আমরণ অনশনের খবর পেয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মাহমুদুল নুরুল কবির বিকেল ৪টার দিকে কর্মসূচিস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়ার কথা শোনেন এবং তাদের সঙ্গে আগামী সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে সমাজসেবা অধিদপ্তরে বসার আশ্বাস দেন। কিন্তু এই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।

‘চাকরিপ্রত্যাশী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী গ্রাজুয়েট পরিষদ’র আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী হুসাইন এ বিষয়ে বলেন, এর আগেও আমরা কয়েকবার সমাজসেবা অধিদপ্তরে গিয়েছি। কিন্তু আমাদের আশানুরূপ কোনো ফল পাইনি। সেজন্য বিশ্বাস করতে পারছি না। তাকে (গাজী মাহমুদুল নুরুল কবির) আমরা জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের কর্মসূচি চলবে। এর মাঝেই আপনার সঙ্গে বসবো, তাতে দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে।

একইসঙ্গে আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাওয়া পর্যন্ত তারা সংসদের সামনে রাজপথ ছাড়বেন না।

পুলিশের তেজগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মাহমুদ হাসান বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা এখানে ডিউটি করছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে ও সংসদীয় অধিবেশনের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি, তারা বিষয়টা দেখছেন। পরবর্তীতে যে নির্দেশ আসে, সে নির্দেশ মোতাবেক আমরা পদক্ষেপ নেবো।’

এদিকে আমরণ অনশনে অংশ নেওয়া শতাধিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর মধ্যে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের সোহরাওয়ারর্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

-ডিকে

FacebookTwitter