লাইফস্টাইলঃ
মধু একটি সুপেয় ঔষধিগুণ সম্পন্ন তরল ভেষজ। এটি স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রোগ মুক্তিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই তরল পণ্যটি ভেজাল বা নকল করে বাজারে বিক্রি করছে অসাধু চক্র।

ক্রেতারা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও বছরের পর বছর নকল মধুই আসল মনে করে কিনছেন। সাধারণত মধুর রং, স্বাদ ও গন্ধ মৌমাছির সংগৃহীত মিষ্টি রসের ওপর নির্ভরশীল। এর প্রধান রাসায়নিক উপাদান ফ্রুক্টোজ এবং ডেক্সট্রোজ।

এছাড়া, সুক্রোজ, প্রোটিন, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, লৌহ, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, ক্লোরিন, গন্ধক এবং ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘কে’ ও ‘ই’ এতে উপস্থিত থাকে। এ কারণে খাঁটি মধু খেলে বহুমুখী উপকার পাওয়া যায়। প্রতি দিন এক চামচ করে মধু খেলে রোগ ব্যাধি কমে যাবে এবং শরীর সুস্থ হয়ে উঠবে।’

পাঠক আসল মধু চেনার উপায় কী তাহা সম্পর্কে জানা যাক। আসল মধু মুখে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গলার ভেতরে এক ধরনের ঝাঁজ লাগবে। খাঁটি মধু পানির মধ্যে ছেড়ে দিলে সহজে গলবে না।একদম পানির নীচে চলে যাবে। কিন্তু চিনি বা মিষ্টির সিরা থাকলে নীচে যাওয়ার আগেই গলে যাবে। এছাড়া, সিগারেটের ফুয়েল পেপারে আসল মধু মিশিয়ে আগুন লাগিয়ে দিলে এটা পুরে ছাই হয়ে যাবে। কিন্তু পানি বা মিষ্টির রস থাকলে ওই পেপারে আগুন জ্বলবে না। আসল মধু ফ্রিজে রাখলে কখনও জমাট বাঁধবে না, ফ্রিজের তাপমাত্রা যত কমানো হোক না কেন। দুধে যেমন সর পড়ে আসল মধুতেও তেমনই সরের মতো আবরণ পড়তে পারে।

এছাড়াও আসল মধুতে ফেনা হবে না, তবে দুধের মতো সর পড়তে পারে। সব সময় আসল মধু গাঢ় ও পুরু হয়ে থাকে। আসল মধুর স্বাভাবিক সুন্দর গন্ধ থাকে। আর নকল মধুর একটু টক গন্ধ থাকবে ও পাতলা হবে। তাছাড়াও কয়েকটি পরীক্ষার মাধ্যমে আসল মধু নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ আছে।’

মোমবাতি পরীক্ষা:

একটি মোমবাতি নিন ও মোমবাতির সলতেকে ভালোভাবে মধুতে চুবিয়ে নিন। এবার আগুন দিয়ে জ্বালাবার চেষ্টা করুন। যদি জ্বলে ওঠে, তাহলে বুঝবেন যে মধু খাঁটি। আর যদি না জ্বলে ,বুঝবেন যে ওই মধুতে পানি মেশানো আছে, অর্থাৎ ভেজাল মধু।

কাপড় পরীক্ষা:

এক টুকরো সাদা কাপড়ে মধু মাখান। আধ ঘণ্টা রাখুন।তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। যদি দাগ থেকে যায়, বুঝবেন এটি খাঁটি মধুটি নয়।

ফ্রিজিং পরীক্ষা:

মধুকে ফ্রিজের মধ্যে রেখে দিন। খাঁটি মধু জমবে না। ভেজাল মধু পুরোপুরি না জমলেও জমাট তলানি পড়বে।

আগুন পরীক্ষা:

মধুতে আগুন না জ্বললে বুঝবেন যে, ওই মধু পুরোটাই নকল বা ভেজাল মধু। এতে প্রচুর পরিমাণে পানি আছে। ফলে আগুন জ্বলছে না। আর যদি আগুন জ্বলে ওঠে এবং একই সঙ্গে পটপট শব্দ হয়, তাহলে বুঝবেন যে এই মধু আসল। তবে এর সঙ্গে পানি মেশানো আছে। মধুর ভেতরে যত বেশি পানি থাকে,আগুন ধরালে শব্দও তত বেশি হয়ে থাকে।

এছাড়া, বেশ কিছুদিন ঘরে রেখে দিলে মধুতে চিনি জমতে পারে। মধু পাত্রসহ গরম পানিতে যদি কিছুক্ষণ রাখেন, তাহলে এই চিনি গলে গেলে মধু আবার স্বাভাবিক হয় আসবে। নকল মধুর ক্ষেত্রে এটা হবে না। খাঁটি মধুর চিনির দানা অনেক বড় বড় হয়ে থাকে। যা দেখলেই স্বাভাবিক চিনির দানার মতো লাগে না।

এখন মধুর কিছু গুণাগুণ সম্পর্কে জানা যাক

চায়ের সঙ্গে মধু ও আদার রস মিশিয়ে খেলে সর্দি ও শ্লেষা রোগের উপশম হয়। পানির সঙ্গে অল্প পরিমাণে মধু মিশিয়ে পান করলে পাকস্থলীর উপশম হয়। প্রতিদিন ভোরে দুই চা- চামচ মধু পানিতে মিশিয়ে একাধারে চার-পাঁচ মাস ধরে পান করলে চুলকানি, ব্রন,ফুসকরি প্রভৃতি ত্বকের রোগ একেবারে নির্মূল হয়ে যায়। এক কাপ দুধের সঙ্গে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে শক্তি বাড়ে।

-সংগৃহীত

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily