অর্থনীতিঃ
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) এবং গ্রামীণ ইউগ্লেনা, জাপানের ইউগলেনা কোম্পানি লিমিটেড ও বাংলাদেশের গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র কৃষকদের মুগ ডাল চাষে সহযোগিতা করতে একটি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
এই উচ্চ-মূল্যের ফসলটি কৃষকদের আয় বাড়াতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে সহযোগিতা করবে।
উভয় পক্ষের স্বাক্ষরিত একটি অভিপ্রায়পত্রের মাধ্যমে আজ ঢাকায় এই সহযোগিতার সূচনা হয়। বাংলাদেশে ইফাদের প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে সরকারি-বেসরকারি যৌথ কার্যক্রম জোরদার করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য।
এটি ইফাদের অর্থায়নকৃত প্রকল্পাধীন কৃষকদের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে সক্ষম করবে, অন্যদিকে গ্রামীণ ইউগ্লেনা বাংলাদেশী কৃষকদের দ্বারা উৎপাদিত ভাল মানের মুগ ডাল প্রচুর পরিমাণে সংগ্রহ করতে সক্ষম হবে।
এই উদ্যোগের অংশ হিসাবে উপকূলীয় কৃষকদের জাপানে ব্যবহৃত প্রযুক্তির উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং মুগ ডালের আন্তর্জাতিক ভ্যালু-চেইন প্রবেশ করার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হবে।
“ইফাদ যৌথ উদ্যোগকে গুরুত্ব দেয়। এই নবায়নকৃত অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সাথে সম্পৃক্ততাকে উৎসাহিত করবে। যদি দুই পক্ষের লক্ষ্য সমন্বিত হয় এবং প্রস্তাবিত কার্যক্রমগুলি গ্রামীণ কৃষকদের অবস্থার উন্নতি করে, তাহলে আমরা এই ধরনের যৌথ উদ্যোগের সাথে আরও জড়িত থাকার চেষ্টা করব,” বলেন আর্নো হ্যামেলিয়ার্স, ইফাদ কান্ট্রি ডিরেক্টর, বাংলাদেশ।
২০২২থেকে ২০২৮ পর্যন্ত ছয় বছরের এই কার্যক্রমে, কৃষকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ভাল মানের কৃষি উপকরণের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে, এবং নিরাপদ, পুষ্টিকর ও বৈচিত্র্যময় উৎপাদনের জন্য কৃষকদের দক্ষভাবে এই কৃষি উপকরণের ব্যবহারে প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে ইফাদ এবং ইউগ্লেনা একযোগে কাজ করবে।
“গ্রামীণ ইউগ্লেনা গ্রামীণএলাকার কৃষকদের দারিদ্র্য ও অপুষ্টি নিরসনে কাজ করতে আগ্রহী। এই লক্ষ্য অর্জনের একটি মূল বিষয় হল সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করা।
ইফাদ এবং গ্রামীণ ইউগ্লেনার মধ্যে এই যৌথ উদ্যোগ উভয় সংস্থাকেই তাদের নিজ নিজ লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।
আমরা নিশ্চিত যে নতুন আরো আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এটি একটি উদ্ভাবনী মডেল হয়ে উঠবে,” বলেন ইউকোহ সাতাকে, সহ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, গ্রামীণ ইউগলেনা ।
জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় অঞ্চলে উৎপাদকদের, বিশেষ করে নারী ও ক্ষুদ্র কৃষকদের বাজার অধিগম্যতা সহজতর করতে, কৃষকদের কৃষি পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে, এবং রপ্তানি বাজারে প্রবেশাধিকার লাভে এই উদ্যোগটি কাজ করবে।
এই ধরণের উদ্যোগে ইফাদের অংশগ্রহনের প্রভাবের উপর গুরুত্বারোপ করে হ্যামেলিয়ার্স আরো বলেন, “ইফাদ যৌথ সমাধান অর্জনের লক্ষ্যে অংশীদারদের সাথে কাজ করাকে সমর্থন করে যা কিনা কৃষি সপ্রসারণ ও ক্ষুদ্র অর্থায়নে ইফাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ক্ষুদ্র কৃষকদের তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জনে সহায়তা করতে পারে।
যার প্রধান লক্ষ্য হল একটি স্থিতিস্থাপক, বৈচিত্র্যময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা।”
ইফাদের বিনিয়োগগুলি সরকারের অংশীদার মন্ত্রনালয় দ্বারা বাস্তবায়িত হয় এবং ইফাদ প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে একসাথে কাজ করে থাকে।
ইফাদ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের দরিদ্র গ্রামীণ নারী ও পুরুষদের জন্য ৩৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে আসছে, যার লক্ষ্য গ্রামীণ জনগণ ও তাদের জীবিকাকে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে আরও ভালভাবে মানিয়ে নিতে সক্ষম করা; ক্ষুদ্র-উৎপাদক ও উদ্যোক্তাদের উন্নত ভ্যালু চেইন ও বৃহত্তর বাজারে অধিগম্যতা লাভে সহায়তা করা; এবং প্রান্তিক গোষ্ঠী, বিশেষ করে দরিদ্র গ্রামীণ নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করা।
এ পর্যন্ত, ইফাদ ৯৭৩.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা ১১.৭ মিলিয়ন পরিবারের কাছে পৌঁছেছে।
বা আর্নো হ্যামেলিয়ার্স, ইফাদ কান্ট্রি ডিরেক্টর, বাংলাদেশ ইউকোহ সাতাকে, এবং সহ-প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, গ্রামীণ ইউগলেনা ঢাকায় ইফাদ কার্যালয়ে একটি অভিপ্রায়পত্র স্বাক্ষর করেন।
-শিশির