অনলাইনঃ
বৈশ্বিক মহামারীর রূপ নেয়া কোভিড- ১৯ বা নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ২০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তার অঙ্গীকার করেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল)।
এই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে নিজের তৈরি পণ্য অনুদান, জনসচেতনতা সৃষ্টি, স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে সহযোগিতা প্রদান, কোম্পানির কার্যক্রমের সাথে জড়িত প্রতিটি মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং সরবরাহ, বিপণন ও সার্বিক ভ্যালু চেইন ব্যবস্থায় নিয়োজিত কর্মীদের সবার জীবিকা নিশ্চিত করাসহ নানান ধরনের কর্মসূচী ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ।
প্রাদুর্ভাবের সময় থেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেশের সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে স্বাস্থ্যরক্ষায় ও গৃহস্থালীতে নিত্য ব্যবহার্য ইউনিলিভারের বিভিন্ন পণ্য, যেমন- লাইফবয় সাবান, সার্ফ এক্সেল, হুইল ডিটারজেন্ট, ডোমেক্স ক্লিনার ইত্যাদি বিতরণ করে আসছে। বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত এক কোটি টাকা আর্থিক মূল্যের পণ্যসামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বিভিন্ন সংগঠনের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এভাবেই বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে ইউনিলিভার বাংলাদেশ।
ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে লাইফবয়-ই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে এগিয়ে আসে। শুধুমাত্র করোনাভাইরাস মোকাবেলায় জনগণকে সচেতন করে তোলার উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক ব্যাপক প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে আসছে ইউনিলিভার। এ খাতে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়া স্বাস্থ্য সেবা খাতকে আরও শক্তিশালী করতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে প্রায় এক কোটি টাকা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউনিলিভার।
ইউনিলিভার এর ভ্যালু চেইন ব্যবস্থায় নিয়োজিত কর্মীদের জীবিকার নিশ্চিয়তা প্রদান
ইউনিলিভার বাংলাদেশ তার ইকো সিস্টেম বা ভ্যালু চেইন এর সঙ্গে জড়িত সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও জীবিকা নিশ্চিতকরণের অঙ্গীকার করেছে।
প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে প্রায় ২০ হাজার লোকের জীবন-জীবিকা জড়িত। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বাজার ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটায় যদি হঠাৎ করে তাদের আয় নিম্নমুখী বা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়, সেক্ষেত্রে আগামী তিন মাস পর্যন্ত সবার জীবিকা নিশ্চিত করতে ইউনিলিভার অঙ্গীকারাবদ্ধ।
এছাড়া নিজের কর্মী ও তাদের পরিবারবর্গের নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিত করছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম
পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত মান অনুযায়ী নিজস্ব সাপ্লাই চেইন এবং সরবরাহ ও বিক্রয় ব্যবস্থায় নিয়োজিত কর্মীদের নিরাপত্তায় ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবহার নিশ্চিত করেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ।
ইউনিলিভারের অংশীদারগণ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চলাকালে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং তাদের সুরক্ষার লক্ষ্যে ব্র্যাক, ওয়াটারএইড, ইউনিসেফ, এক টাকায় আহার এর মতো বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল)।
এসব কার্যক্রমের জন্য ইউবিএল ইতোমধ্যেই এক কোটি টাকা ব্যয় করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে।
ইউনিলিভারের কর্মীদের অবদান এখানেই শেষ নয়। করোনা মোকাবেলায় সাহায্য হিসেবে ইউনিলিভার বাংলাদেশ এর কর্মীরা ইতোমধ্যে তাদের অন্তত একদিনের বেতনের টাকা প্রদানে অঙ্গীকার করেছে। তাদের দেওয়া অর্থের সমপরিমাণ অর্থ কোম্পানিও দেবে, যা দিয়ে একটি তহবিল গঠন করা হচ্ছে। যাদের সহায়তা পাওয়া খুবই প্রয়োজন, সেই সব অসহায় মানুষকে এই তহবিলের অর্থ দিয়ে সহায়তা প্রদান করা হবে।
এ প্রসঙ্গে ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেদার লেলে বলেন, “চ্যালেঞ্জিং এই সময়ে আমরা আমাদের জনগণের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো, যতটা সম্ভব অধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং তাদেরকে সাহায্য করা। যাতে তারা করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় সক্ষম হন। করোনাজনিত চ্যালেঞ্জের মাত্রা বিবেচনায় এবং বিভিন্ন পর্যায় থেকে তা মোকাবেলা করার লক্ষ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা সরকার, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী অংশীদার ও সুশীল সমাজের সাথে কাজ করে যাচ্ছি।”
-শিশির