রাজনীতিঃ
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়।
শুনানিতে খালেদা জিয়ার ‘অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের’ বিষয়টি আলোচনায় আসে। একপর্যায়ে জয়নুল আবেদীন বলেন; ‘মাই লর্ড, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা এমন যে, তার শরীরে মেডিসিন পুশ করা যাচ্ছে না। এভাবে আর ছয় মাস পর হয়ত সে লাশ হয়ে বের হবে। তাই আমরা মানবিক বিবেচনায় জামিনের জন্য আপনাদের কাছে এসেছি।
উপরে আল্লাহ ছাড়া আর আপনারা ছাড়া আমাদের তো যাবার আর কোনো জায়গা নেই, তাই বারবার আপনাদের কাছে আসি। আপনারা ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্তকেও জামিন দিয়েছেন। আপনাদের এই আদালতেরই সিদ্ধান্ত আছে নারী ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে জামিন বিবেচনা করার। উনি অসুস্থ, হাঁটাচলা করতে পারেন না। উনি তো আর পালিয়ে যাবেন না। তাই ওনাকে মানবিক বিবেচনায় জামিন দেয়া হোক।’
এরপর আদালত ‘আমরা আসছি’ বলে বিরতিতে যান।
এর আগে বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুপ্রিম কোর্টে এই মেডিক্যাল প্রতিবেদন এসে পৌঁছায়।
আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। যদিও এ জামিন আবেদনের শুনানিতে দুইপক্ষের ৩০ জন করে মোট ৬০ জন আইনজীবী থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছিল, তবে শুনানির সময় আদালতে রয়েছেন দুই পক্ষের শত শত আইনজীবীরা।
এই জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার পুরো সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সকাল থেকেই কোর্টের প্রতিটি প্রবেশপথ ও আদালত চত্বরের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যদের দেখা গেছে।
এছাড়াও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সামনে এবং বার ভবন থেকে মূল কোর্ট ভবনের গ্যাংওয়েতে নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মত। এর বাইরে আদালত অঙ্গনে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বাড়তি সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।
সকাল আটটার পর থেকেই আর্চওয়ে এবং মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করে আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্টদের পরিচয়পত্র দেখে আদালত চত্বরে প্রবেশ করানো হচ্ছে।
এর আগে গত ২৮ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ খালেদার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থার মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদন ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু মেডিক্যাল বোর্ডের প্রতিবেদন দিতে ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময় আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এরপর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে মেডিক্যাল প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়ে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির জন্য ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
-কেএম