আপনার স্মার্টফোন সুপারফাস্ট করবেন কিভাবে

আপনার স্মার্টফোন সুপারফাস্ট করবেন কিভাবে
আপনার স্মার্টফোন সুপারফাস্ট করবেন কিভাবে

প্রযুক্তিঃ
দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম সঙ্গী স্মার্টফোন। অতিরিক্ত ব্যবহার করলে অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মতো এই যন্ত্রও স্লো হয়ে পড়ে।

এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন স্লো হলে বিরক্তিকর একটা ব্যাপার মনে হয়। তবে ভালো ব্যাপার হচ্ছে, এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনগুলোর স্পিড অনেকটাই নির্ভর করে ব্যবহারকারীর ব্যবহারের ধরন আর ফোনের সেটিংসের উপর।

স্মার্টফোন ব্যবহারের কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে আর কিছু সেটিংস পরিবর্তন করে আমরা ফোনের স্পিড বাড়াতে পারি। আমরা স্লো স্মার্টফোনকে সুপার ফাস্ট করার উপায় সম্পর্কে জানবো।

সিস্টেম আপডেট

স্মার্টফোন স্লো হওয়ার প্রধান কারণ অপারেটিং সিস্টেম সবসময় আপডেট না থাকাটা। একে সংক্ষেপে ওএস বলা হয়। এটি আপডেট রাখা স্মার্টফোনের জন্য খুবই প্রয়োজন। কারণ কোম্পানিগুলো ওএসের আপডেটের মাধ্যমে সিস্টেমে থাকা ত্রুটি ও বিচ্যুতিগুলো দূর করে থাকে। সে কারণে ওএস আপডেট না থাকলে স্মার্টফোন স্লো হয়ে পড়ে। তাই স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম সবসময় আপডেট রাখার চেষ্টা করুন।

অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনইন্সটল করে দিন

এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনইন্সটল করে দেওয়া। ফোনে প্রচুর স্টোরেজ থাকার বদৌলতে আমরা ইদানিং অতিরিক্ত অ্যাপ নিয়ে ফোন ভরিয়ে ফেলি। এই অ্যাপগুলো হয়ত ফোনের স্টোরেজে কোনো প্রভাব ফেলেনা, তবে ফোনের র‍্যামে জায়গা দখল করে থাকে অনেক অ্যাপই। আর এই কারণেই ফোনে অ্যাপ বেশি থাকলে ফোন স্লো হয়ে যায়। তাই চেষ্টা করুন আপনার এন্ড্রয়েড ফোনটতে যথাসম্ভব কম এবং শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপগুলো রাখতে।

অ্যাপস আপডেট রাখা

স্মার্টফোনের গতি স্লো হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ব্যবহৃত অ্যাপস আপডেট না রাখা। যেকোনো অ্যাপস আপডেট করা হলে ব্যবহারকারীর কাছে সেই অ্যাপস সম্মতি চায়। ব্যবহারকারীকে কেবল অ্যাপটি আপডেটের জন্য সম্মতি দিতে হবে। এতে স্মার্টফোনকে স্লো হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

অ্যাপ এর ক্যাশ ডিলিট করে দিন

ক্রোম, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, মেসেঞ্জার ইত্যাদি অ্যাপ ফোনে প্রচুর পরিমাণ ক্যাশ (Cache) তৈরী করে৷ এসব ডেটাগুলো উক্ত অ্যাপ এর সেটিংসে গিয়ে ক্লিয়ার করুন। তবে অ্যাপের ডাটা (Data) ক্লিয়ার করবেন না। সেক্ষেত্রে ওই অ্যাপে থাকা দরকারী তথ্য মুছে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া এর ফলে আপনি লগ-আউটও হয়ে যেতে পারেন।

ইন্টারনাল স্টোরেজ যথাসম্ভব খালি রাখুন

এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর আরেকটি কার্যকর উপায় হচ্ছে ইন্টারনাল স্টোরেজ যথাসম্ভব খালি রাখা। তবে আমরা আপনাকে আপনার ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ একদম খালি করে রাখতে বলছিনা। ধরুন, আপনার ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ ৩২ জিবি আর আপনি ২জিবি স্পেস নেয়, এমন অ্যাপ বা গেম চালিয়ে থাকেন। আপনি যখন ওই অ্যাপটি চালাবেন, তখন ওই অ্যাপের ডাটাগুলো লোড করতে অ্যাপটি ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজকে ব্যবহার করে। তাই ওই ২জিবির অ্যাপ বা গেমটি চালাতে আপনার ফোনে কম করে হলেও ২ থেকে ৪ জিবি ফ্রি স্পেস থাকা প্রয়োজন। এভাবে ইন্টারনাল স্টোরেজ কিছুটা জায়গা খালি রাখার ফলে অ্যাপগুলো খুব স্মুথভাবে রান করবে আর ফোনের স্পিড ও বৃদ্ধি পাবে।

মাইক্রো-এসডি কার্ড ব্যবহার করুন

ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ খালি রাখতে সম্ভব হলে ফোনে এক্সট্রা মাইক্রো-এসডি কার্ড অর্থাৎ মেমোরি কার্ড ব্যবহার করুন। তবে মাইক্রো-এসডি কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি মাথায় রাখা প্রয়োজন সেটা হল ওই মাইক্রো-এসডি কার্ডের ডাটা লোডিং স্পিড কেমন। আপনি যদি আপনার ফোনে একটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল মাইক্রো-এসডি কার্ড ব্যবহার করেন, তবে ফোন পূর্বের তুলনায় আরো স্লো হয়ে যাবে। তাই মাইক্রো-এসডি কার্ড কেনার সময় দেখেশুনে পরীক্ষা করে কিনবেন।

লাইভ ওয়ালপেপার ও উইজেটস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন

অনেকেই ফোনকে সুন্দর দেখাতে হোমস্ক্রিনে বিভিন্ন ধরনের উইজেট (Widgets) ও লাইভ ওয়ালপেপার ব্যবহার করে থাকেন। তবে এসব উইজেট ও লাইভ ওয়ালপেপার ফোনের স্পিডে প্রভাব ফেলে ও ফোনকে স্লো করে দেয়। তাই আপনার এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনটিতে ভালো স্পিড পেতে চাইলে লাইভ ওয়ালপেপার ও উইজেটস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।

অটো-সিনক বন্ধ করে দিন

Auto-Sync চালু রাখলে ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে বিভিন্ন এক্টিভিটি চালু থাকে, যার ফলে ফোন কিছুটা স্লো হয়ে যায়। আপনার ফোনেও যদি অটো সিনক চালু থাকে, তবে সেটি বন্ধ করে দিন। উল্লেখ্য যে, অটো সিনক বন্ধ করে দিলে আপনি সদ্য আসা মেইলগুলো সম্পর্কে নোটিফিকেশন পাবেন না। এছাড়াও অটো ক্লাউড সিনক ও বন্ধ হয়ে যাবে।

ডাটা সেভার মোড ব্যবহার করুন

ফোনে আপনি যে ব্রাউজার ব্যবহার করেন, সেটির ডাটা সেভার মোড অন করে দিন। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটগুলো দ্রত লোড হবে এবং ভালো স্পিড পাবেন। তবে এতে আপনার ব্রাউজিং কোয়ালিটির অবনতি হতে পারে।

ওয়াইফাই কানেকশন অপটিমাইজ করুন

অনেক সময় দুর্বল ওয়াইফাই কানেকশনে কানেক্টেড থাকার দরুণ ফোন স্লো হয়ে যায়। তাই ওয়াইফাই ডিসকানেকট করে আপনার ফোনের স্পিড পরীক্ষা করে এটি নিশ্চিত করুন যে আপনি ওয়াইফাইজনিত কারণে ফোন স্লো হওয়ার মত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কিনা। এমন অবস্থায় আপনার ওয়াইফাই কানেকশন অপটিমাইজ করার ব্যবস্থা করুন।

টাস্ক কিলিং মাত্রা রেখে করুন

অনেকেই মনে করেন টাস্ক ম্যানেজার ক্লিয়ার রাখলে ফোনে অধিক স্পিড পাবেন। তাই তারা সবসময় একটি অ্যাপ থেকে অন্য অ্যাপে প্রবেশ করার সময় আগের অ্যাপটি টাস্ক ম্যানেজার থেকে কেটে দেন। তবে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। একটি অ্যাপ ক্লোজ করে দিলে পরেরবার অ্যাপটি চালু করতে ফোনকে প্রচুর মেমোরি খরচ করতে হয়, যার কারণে ফোন স্লো হয়ে যায়। তাই মাত্রার বাইরে সবসময় টাস্ক কিলিং করবেন না। পাশাপাশি একসাথে অনেকগুলো অ্যাপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এতেও ফোন স্লো হয়ে যায়।

ব্যাটারি বদলে ফেলুন

অনেকসময় দূর্বল ব্যাটারির কারণেও ফোনের পারফরম্যান্সে ব্যাঘাত ঘটে। তাই এটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন আপনার ফোন স্লো হওয়ার পেছনে ব্যাটারিজনিত কোনো সমস্যা দায়ী কিনা। সেক্ষেত্রে ফোনের ব্যাটারি বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

ফোন রিস্টার্ট করুন

এটি প্রথম এবং সবচেয়ে সহজ উপায়। ফোনটি রিস্টার্ট করার পর মোবাইল নেটওয়ার্ক সার্চ করে, এর কারন ইন্টারনেটের স্পিড কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই উপায় ছাড়াও মোবাইল ডেটা একবার বন্ধ করে আবার চালু করতে পারেন।

-টিপু

FacebookTwitter