আদালত থেকে খালেদা জিয়া বেরিয়ে গেলেন

খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে করা রিট বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি অনাস্থার আবেদন খারিজ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চই অনাস্থার আবেদন খারিজ করে রিট শুনানি শুরু করেন। শুনানি শুরুর সাথে সাথেই আদালত থেকে একসঙ্গে বেরিয়ে যান খালেদার আইনজীবীরা।

এরপর এ বেঞ্চেই খালেদার রিটের উপর শুনানি শুরু করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার এক আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল বলেন: আমরা হাইকোর্টের এ বেঞ্চের প্রতি লিখিত অনাস্থা দেয়ার পর, এ আদালতে এ বিষয়ে শুনানি শুরু হওয়ায় আমরা আদালত থেকে চলে এসেছি।

এরআগে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের এই একক বেঞ্চে খালেদা জিয়ার তিনটি রিট শুনানির জন্য উঠলে এ বেঞ্চে বিষয়টি শুনানিতে অনাস্থার কথা মৌখিকভাবে জানান খালেদার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তখন আদালত অনাস্থার বিষয়টি লিখিতভাবে জানাতে বলেছিলেন। এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন তারা সময়ের অভাবে অনাস্থার বিষয়টি লিখিতভাবে করে আনতে পারেনিনি। এরপর আদালত লিখিত ভাবে অনাস্থা জানাতে বলে বিষিয়টির উপর শুনানি মুলতবি করেন।

ওইদিন আদালত থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়ার এক আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল বলেছিলেন: যেহেতু এই রিটের বিষয়ে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ থেকে এর আগে বিভক্ত আদেশ এসেছিল। তাই নিয়ম অনুযায়ী বিভক্ত আদেশ প্রদানকারী বিচারকের চেয়ে সিনিয়র বিচারকের বেঞ্চে এ রিট শুনানি হওয়ার কথা। কিন্ত বিভক্ত আদেশ দেয়া বেঞ্চের বিচারকের চেয়ে জুনিয়র বিচারকের বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য এসেছে বলে আমরা এই একক বেঞ্চে রিট শুনানিতে অনাস্থা জানিয়েছি।

এর আগে খালেদা জিয়ার মনোনয়ন নিয়ে করা এই তিনটি রিটের শুনানি হয় বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চে। তবে শুনানি শেষে আদেশে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতির মতের সাথে বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি ভিন্ন মত পোষণ করলে রিটের বিষিয়ে বিভক্ত আদেশ আসে। দুই বিচারপতির এ বিভক্ত আদেশের ফলে নিয়ম অনুযায়ী এ রিটের বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে যায়। পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি খালেদা জিয়ার এ তিনটি রিট শুনানির জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসানের একক বেঞ্চ তথা তৃতীয় বেঞ্চ গঠন করে দেন। সে ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার তিনটি রিট বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চে শুনানির জন্য উঠে। তখনই খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ বেঞ্চে বিষয়টি শুনানিতে তাদের অনাস্থার কথা মৌখিকভাবে জানান।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে প্রার্থী হতে খালেদা জিয়ার জমা দেয়া মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে গত ৯ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন খালেদা জিয়া।

এর আগে ৮ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চার কমিশনার রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। তবে কমিশনার মাহবুব তালুকদার খালেদার মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা দেন। চার এক সিদ্ধান্তের এ রায়ের ফলে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

খালেদা জিয়ার এই তিনটি মনোনয়নপত্র এর আগে বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। দুই বছরের বেশি কারাদণ্ড থাকায় খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়ে বলে উল্লেখ করা হয়।

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

FacebookTwitter