আইএফসি’র বিনিয়োগে কর্মসংস্থান বাড়বেঃ অর্থমন্ত্রী

অর্থনীতিঃ
বিশ্বব্যাংক থেকে শুরু করে এবার আমাদের সঙ্গে যারাই সাক্ষাত করেছে সবাই বলেছে আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। সবাই স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সঠিক পথে রয়েছে। সবার কাছ থেকে একটা স্পষ্ট বার্তা ছিল যে, সবাই প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়। এটা আমাদের জন্য বড় বার্তা।

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে বাড়তি ঋণ দিতে উন্মুখ হয়ে আছে। আশা করছি এইবারই বিশ্বব্যাংক থেকে আমাদের সব থেকে বড় সহযোগিতা আসবে।

ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে আইএফসির আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট স্নিজানা স্টিইল্জকোভিকের (Snezana Stoiljkovic) নেতেৃত্বে প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক, জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশনের (জেবিআইসি) ডেপুটি গভর্ণর নবুমিতসু হায়াশির (Nobumitsu Hayashi) সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ, ইউএসএআইডি’র সাথে ট্যাক্স রিফর্ম বিষয়ক বৈঠক এবং সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের আয়োজিত বৈঠক শেষে এক ব্রিফিং-এ মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়ন বিনিয়োগ বাড়াবে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি)। এ খাতে সারাবিশ্বে সংস্থাটি মোট এক হাজার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি বেসরকারি কোম্পানি ইতিমধ্যে ১৯ মিলিয়ন ডলার নিয়েছে। এর আগে আরো অনেকগুলো বেসরকারি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে আইএফসি। যার ফলাফল বেশ ভাল। এজন্য এ দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় সংস্থাটি। আইএফসি’র বিশাল বিনিয়োগ ঘোষণা লুফে নিতে পারে বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের পরিধি আরো বাড়বে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সরকার। আইএফসি ঋণে সুদহার ১০ শতাংশের কম হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ইনকাম ট্যাক্স কালেকশনে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইউএসএআইডি সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এছাড়া জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন (জেবিআইসি) বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন যাবৎ নিষ্ক্রীয় ছিল। এবার তারা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে কার্যকরভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা বিনিয়োগ করলে আমাদের আরেকটি নতুন উইন্ডো খুলে যাবে। তারা তাদের দেশের বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমাদের দেশে নিয়ে আসবে যা আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক।

সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠক সম্পর্ক অর্থমন্ত্রী বলেন, সড়কের নিরাপত্তা জোরদারকরণ অত্যন্ত জরুরি। অকাল মৃত্যু কখনও কারোর জন্য কাম্য হতে পারে না। সড়কে চলাচল ও ট্রাফিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশ্ব ব্যাংক যদি এ বিষয়ে কাজ করে আশা করি অত্যন্ত ভাল করবে। তবে শুধু একটি কোন নির্দিষ্ট পদ্ধতি দিয়ে এটি সম্ভব নয়, যে দেশের জন্য যেটি উপযোগী সেটি সে দেশে প্রয়োগ করতে হবে। এটি একটি অত্যন্ত জরুরী এবং সময়ের দাবী। তবে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে সেটি হচ্ছে সচেতনা ‍বৃদ্ধি। সকলের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধি করতে হবে এবং এটি শুরু করতে হবে স্কুলের বাচ্চাদের থেকে। তাদের বিভিন্নভাবে এ বিষয়ে শিক্ষা প্রধান করতে হবে। তারা তাদের পিতামাতাকে এবং পিতামাতারা সকল আত্ত্বীয়স্বজনের সাথে শেয়ারের মাধ্যমে এই সচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব। পাশাপাশি সরকারকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে আইন পাশ করা হয়েছে, চার লেন-ছয়লেন রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে, এগুলোর পাশ দিয়ে লোকাল যানবাহনের জন্য সার্ভিস লেন রাখা হচ্ছে, চালকদের বিশ্রামের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি করা হচ্ছে।

এসকল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অর্থ বিভাগের সচিব আ্বদুর রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ, বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইকনোমিক মিনিস্টার মো: সাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী।

-শিশির

FacebookTwitter