গরম থাকবে আরও তিন দিন, কেন?

অনলাইনঃ
চলছে আষাঢ় মাস। তবুও গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা প্রচণ্ড দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর বলছে, এই গরম থাকবে আরো অন্তত তিন দিন। ২৭ জুনের পর থেকে দেশে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে।

তবে আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। বৃষ্টি হলেও গরম থাকবে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বাংলা’কে জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনের মতো আজও গরম তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে। এমনটা চলতে পারে আরো তিনদিন। তবে বৃষ্টি হলে গরমের মাত্রা কিছুটা কমতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে লঘুচাপ। এই লঘুচাপের প্রভাবে গরম বাড়ছে। তবে এরকম দাবদাহ আষাঢ় মাসে অনিয়মিত ঘটনা বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যশোরে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বনিম্ন ছিল টেকনাফে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ ছিল ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আর্দ্রতার কারণে আজ এই তাপমাত্রা আরো বেশি অনুভূত হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আরও বলেন, এখন রাতের তুলনায় দিনের ব্যাপ্তি অনেক বড়। সূর্যের লম্ব কিরণের কারণে যে তাপমাত্রা বাংলাদেশের বায়ুমন্ডলে প্রভাবিত হয়, সেটি রাতে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারে না। ফলে গরম থেকে যায়। তবে, বৃষ্টি হলে গরমের তীব্রতা কিছুটা কমে আসবে।

গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাকিল মাহমুদ বাংলা’কে বলেন, ‘প্রচণ্ড গরম থেকে নিজেকে রক্ষা করতে প্রচুর পরিমাণে ফুটানো পানি, ডাবের পানি বেলের সরবত এবং খাবার স্যালাইন পান করতে হবে। একই সঙ্গে ফুটপাতের খাবার পরিহার ও শরবত পান না করার পরামর্শ দিয়েছেন। গরমের সময় মাছ-মাংসের চেয়ে বেশি বেশি সবজি খাওয়ার কথা বলেছেন। আর বাইরে বের হলে সঙ্গে ছাতা নিয়ে বের হতে হবে।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো.মনজুরুল হাসান বাংলা’কে বলেন, ‘মনুষ্য সৃষ্ট কারণ আজ ব্যাপকভাবে দায়ী। বাতাসে দিনে দিনে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি, ওজন আবরণের ক্ষয়বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে।

ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই গতিও একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এতে বদলে যাচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ গঠনে পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
আমাদের বাঁচতে হলে প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ ও সবুজ বনায়ন করা প্রয়োজন। তবেই মুক্তি মিলতে পারে।’

উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

এখনো পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সেটিই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।

-ডিকে

FacebookTwitter