নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ বলেছেন, সরকারের নীতি হচ্ছে কৃষি শস্য বীমাতে সরকার যাবে না।
তারপরও জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতির খসড়াতে এটি সংযোজন করা হয়েছে। এটা সরকারের নীতির লংঘন। এটা যারা করেছে তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।
বুধবার (৮ আগষ্ট ২০১৮) রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটরিয়ামে ‘জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ২০১৮ চুড়ান্তকরণ’ শীর্ষক কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শস্য বীমা সংক্রান্ত কোনো সভায় কেউ যাবে না, কোনো বক্তব্য দেবে না এবং এ বিষয়ে কোনো আলোচনা উঠে আসলে বলতে হবে সরকারের অবস্থান শস্য বীমায় নেই।
সিনিয়র সচিব বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভায় জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮ অনুমোদন হয়েছে। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের কৃষি যাতে লাভবান হয়, সে কথা মাথায় রেখে জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮ এর আলোকে জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ২০১৮ চুড়ান্ত করতে হবে। শস্য নিবিড়তা, মাটির স্বাস্থ্য, উদ্ভাবিত প্রযুক্তির দুর্বলতা, জলবায়ু পরিবর্তন, ফসলের সংগ্রহোত্তর অপচয়সহ কৃষির চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনা নিয়ে জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি চুড়ান্ত করতে হবে। নীতি চুড়ান্তকরণের ক্ষেত্রে দেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের চ্যলেঞ্জও বিবেচনায় রাখতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীদের উদ্দেশ্যে সিনিয়র সচিব বলেন, চাষীদের লাভের কথা মাথায় রেখে তাদেরকে ফসল চাষের উপদেশ দিতে হবে। কৃষি পণ্যের বাজার নিশ্চিত না হলে উপদেশ দিয়ে তাদেরকে ক্ষতি ও হয়রানির মুখে ফেলা ঠিক হবে না। ধান উৎপাদনে ৪র্থ, সবজিতে ৩য়, আমে উৎপাদনে ৭ম, পেয়ারা উৎপাদনে ৮ম এসব বক্তব্য দিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগে লাভ নেই। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। দানাদার ফসলের মধ্যে ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও আমরা গম আমদানি করছি।
তিনি বলেন, আবার বন্যা ও বিভিন্ন দৈবদুর্বিপাকের সময় কৃষি ভার্নারেবল অবস্থায় চলে যায়। এটা আমাদের স্মরন করতে হবে কৃষি নীতি প্রনয়নের সময়। আমাদের এখন পুষ্টিসম্মত খাদ্য দরকার। ধান উৎপাদনের পাশাপাশি ডাল, তেল, ফল, সবজি প্রভৃতি ফসলের উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি দ্রুত মাঠে নিয়ে যেতে হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ কর্মশালা আয়োজন করে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতির খসড়া উপস্থাপন করেন, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেম। নির্ধারিত আলোচকের বক্তব্য দেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মো. সেকেন্দার আলী ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ওয়ায়েস কবীর। স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ। বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামুল হকসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা ও কৃষক প্রতিনিধিরা এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
–এসএম