অনলাইনঃ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আগামী ৫ এপ্রিল শুক্রবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।
একই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার কমিটিও পূর্ণাঙ্গ করা হবে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আনুষাঙ্গিক সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পেলেই তা ঘোষণা করা হবে।
এর আগে, বুধবার (৩ এপ্রিল) ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের গণভবনে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনা নিয়ে আগামী শুক্রবার (৫ এপ্রিল) যে কোন সময়ে ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হবে। একই সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটিও ঘোষণা করা হবে।
ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের ভাষ্যমতে, চুলচেরা যাচাই-বাছাই ও বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। যেহেতু এর আগে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ ঘটানোর বেশ অভিযোগ ছিল, সেদিক বিবেচনায় পদপ্রত্যাশীদের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। কমিটিতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের অগ্রাধিকার, ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।
কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। আমাদের অভিভাবক বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিলেই আমরা কমিটির তালিকা প্রকাশ করবো। তবে এটি এ সপ্তাহের মধ্যেই হচ্ছে।
এদিকে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা শেষ মুহূর্তে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা, সংসদ সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতাদের কাছে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ আওয়ামী পরিবারের সদস্য প্রমাণ দিতে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছ থেকে প্রত্যায়নপত্রও নিয়ে আসছেন। তবে কমিটিতে পদ পেতে বিতর্কিত ব্যক্তিরা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে, ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনের পর কমিটি ঘোষণার নিয়ম থাকলেও শীর্ষ পদের নেতৃত্ব বাছাইয়ে সময় নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বছর ৩১ জুলাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি এবং গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছরের জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। একই সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ১১(খ) ও (গ) ধারায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কার্যকাল দুই বছর। এর মধ্যে সম্মেলন না হলে কমিটির কার্যকারিতা থাকবে না। বিশেষ বা জরুরি পরিস্থিতিতে বর্ধিত সভায় অনুমোদন সাপেক্ষে কমিটি তিন মাসের জন্য সময় বাড়াতে পারে। এছাড়া গঠনতন্ত্রে জেলা ইউনিটগুলোর মেয়াদ রাখা হয়েছে এক বছর।
সেই হিসেবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি এরই মধ্যে নির্ধারিত সময়ের একটা অংশ পার করে ফেলেছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছাড়াই। জাতীয় নির্বাচন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসু নির্বাচনের কারণে হওয়ার কথা থাকলেও কয়েক দফা পিছিয়ে যায় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
এদিকে কেন্দ্রীয় কমিটি না হওয়ায় ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগরের দুই গুরুত্বপূর্ণ শাখার কমিটিও আটকে আছে। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশের পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণেরও পূর্ণাঙ্গ কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে।
পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, আমাদের কমিটির খসড়া অনেক আগেই প্রস্তুত করে রেখেছি। মেধা, যোগ্যতা ও সাংগঠনিক দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে আমরা কমিটিতে পদায়ন করবো।
একই কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আহমেদ। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগকে ধারণ করে এমন পরিবারের সন্তানরাই কমিটিতে থাকবেন। এজন্য আমরা পদ প্রত্যাশীদের বিষয়ে খোজ খবর নিয়েছি। আশা করি গ্রহণযোগ্য কমিটি উপহার দিতে পারবো।
-ডিকে