অনলাইনঃ
আইন অনুযায়ী হিজডারা এমপি হতে পারছেন না। প্রচলিত ভাষায় হিজড়া হিসেবে পরিচিত জনগোষ্ঠীর কাউকে এমপি করতে চাইলে জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন আইন পরিবর্তন করতে হবে।
কারণ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনে প্রার্থীর যোগ্যতা ও অযোগ্যতায় বলা হয়েছে, সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকার জন্য সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত যোগ্যতাসম্পন্ন যেকোনো মহিলা সংরক্ষিত মহিলা আসনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন। তাই হিজড়াদের কাউকে এমপি করতে চাইলে তাদের সংশ্লিষ্ট ধারায় যুক্ত করতে হবে। এর আগে ২০১৩ সালের নভেম্বরে মন্ত্রিসভা বৈঠকে হিজড়াদের লিঙ্গ পরিচয়কে সরকার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়। ১১ই নভেম্বর এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন করে জানানো হয়, সরকারি নথিপত্র ও পাসপোর্টে তাদের লিঙ্গ পরিচয় ‘হিজড়া হিসেবে উল্লেখ করা হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন ফরম কিনেছেন তৃতীয় লিঙ্গের তিনজন প্রতিনিধি। তাদের যে কোনো একজন এমপি হয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সেবা করতে চান। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ফরম জমা দেয়ার সময় এমনটি জানিয়ে নাদিরা খানম হিজড়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ফরম কিনতে বলেছেন।
আমাদের যেকোনো একজনকে এমপি করা হবে। ৮টি বিভাগ থেকে আমাদের ৮ জনের ফরম কেনার কথা ছিল। কিন্তু সমঝোতার মাধ্যমে তিনজন হিজড়া ফরম তুলে জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে নাদিরা রংপুর, আরিফা ইয়াসমিন ময়ূরী ময়মনসিংহ ও ফাল্গুনী চট্টগ্রাম থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
হিজডা নাদিরা বলেন, আমরা ভিক্ষাবৃত্তি করতে চাই না, আমরা এ দেশের অন্য দশজন মানুষের মতো কাজ করে ও চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ভোটাধিকার দিয়েছেন, অধিকারও দেবেন।
আইনজীবিদের মতে, আইন অনুযায়ী হিজড়াদের সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হওয়ার সুযোগ নেই। তবে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। আমাদের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশ তাদেরকে বেশ মর্যাদার সঙ্গে দেখছে।
এদিকে কয়েক দিন আগে হিজড়া সম্প্রদায়ের নেতা ময়ূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন এমন হিজড়াদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন এবার সংসদে হিজড়াদের প্রতিনিধি থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদের ৩৫০ আসনের মধ্যে ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এবার ২৯৯ আসনে সরাসরি ভোট হলেও সংরক্ষিত আসন বণ্টন হয় ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে এবার আওয়ামী লীগ ৪৩টি, জাতীয় পার্টি ৪টি, বিএনপি ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোটভুক্ত হয়ে ১টি সংরক্ষিত আসন পেতে পারেন।