নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশানের কূটনীতিক পাড়ায় হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা।
তাদের ওই হামলা ঠেকাতে গিয়ে পুলিশের দুই উর্ধতন কর্মকর্তাও নিহত হন। ওই ঘটনার দুই বছর পর হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, চিহ্নিত বাকি ১৩ জন নজিরবিহীন ওই হামলার পর বিভিন্ন অভিযানে নিহত হওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তারা ওই অভিযোগপত্র আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
তিনি জানান, জীবিত আট আসামির মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন, বাকি দুজন পলাতক।
কারাগারে থাকা ছয় আসামি হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান এবং হাদিসুর রহমান সাগর।
পলাতক দুই আসামি শহীদুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছে বলে জানান মনিরুল।
তিনি বলেন, তদন্তে দেখা গেছে, আসামিরা পাঁচ মাস আগে থেকেই হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশকে অস্থিতিশীল করা, বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র বানানো, সরকারকে চাপের মুখে ফেলা।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্ত প্রতিবেদনে চিহ্নিত ২১ জনের মধ্যে পাঁচজন গুলশান হামলায় সরাসরি অংশ নেন। বাকিরা হামলার পরিকল্পনা, সমন্বয়, প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র-বোমা সংগ্রহসহ বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, হামলার পরদিন সকালে হলি আর্টিজান বেকারি থেকে গ্রেপ্তার নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমের নাম এই অভিযোগপত্রে আসেনি। অভিযানে নিহত হলি আর্টিজানের পাচক সাইফুল ইসলামকে শুরুতে সন্দেহের তালিকায় রাখা হলেও তার সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ তদন্তকারীরা পাননি।
হলি আর্টিজান হামলায় অংশ নেওয়া নব্য জেএমবির পাঁচ জঙ্গি নিবরাজ ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল নিহত হন সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে।
আর পরে জঙ্গিবিরোধী বিভিন্ন অভিযানে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তামিম চৌধুরী, জাহিদুল ইসলাম, তানভীর কাদেরী, নুরুল ইসলাম মারজান, আবু রায়হান তারেক, সারোয়ার জাহান, বাসারুজ্জামান চকলেট ও ছোট মিজান নিহত হন।
-আরবি