চুয়াডাঙ্গা-১: ৯ দিনে দিলীপের উপর ১৪ বার হামলা

চুয়াডাঙ্গা-১: ৯ দিনে দিলীপের উপর ১৪ বার হামলা
চুয়াডাঙ্গা-১: ৯ দিনে দিলীপের উপর ১৪ বার হামলা

সারােদশঃ
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ভোটের মাঠে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। সেখানে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা দিলীপ কুমার আগরওয়ালা নৌকার প্রার্থীকে কঠিন প্রতিদ্বন্বিতার মুখে ফেলে দিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে এখন সকলের মুখে মুখে দিলীপ কুমার আগরওয়ালার নাম ছড়িয়ে পড়েছে। ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে ভোটাররা ততো ‘ঈগল’ প্রতীকের সমর্থনে জড়ো হচ্ছেন।

হাজার হাজার মানুষ দিলীপ কুমারের প্রচার কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছেন। তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে পড়েছেন নৌকার কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। ফলে প্রতিপক্ষ কর্মীরা দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ও তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর চরম নিপীড়ণ-অত্যাচার শুরু করেছে।

গত ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু করে একের পর এক নৌকার প্রার্থীর নেতা-কর্মীরা হামলা চালাচ্ছে, ঈগল প্রতীকের পোস্টা-ব্যানার ছিঁড়ছে, প্রচার গাড়ি ভাঙচুর করছেন।

এছাড়া কর্মীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হুমকি দিচ্ছে। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঈগল প্রতীকের প্রতিপক্ষের বেশ কয়েকজন কর্মী পুলিশ আটক করেছে। এছাড়া যেখানে সমস্যা হচ্ছে সেখানেই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে।

তবে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈগল প্রতীকের জনসমর্থন বাড়তে থাকায় নৌকার প্রার্থীর কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। একের পর এক এসব হামলার ঘটনায় ভোটাররা ভীত হয়ে পড়ছেন। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত নিরপেক্ষ ভোটদানের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন সাধারন ভোটাররা।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কর্মীদের এসব অত্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। তিনি প্রশাসনের কাছে এসব অন্যায়ের প্রতিকার দাবি করেছেন।

স্থানীয়ভাবে পাওয়া তথ্য ও থানায় দায়ের অভিযোগের নথি পর্যালোচনায় জানা গেছে, গত ১৮ ডিসেম্বর ডাউকির বিভিন্ন এলাকায় দিলীপ কুমার আগরওয়ালার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা থেকে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।

পরদিন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা এলাকার কবরী রোডে ঈগল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

ওই ঘটনায় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। একই দিন (১৯ ডিসেম্বর) চুয়াডাঙ্গা সদরে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা নারী কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শোভাযাত্রা করা কালীন নৌকা সমর্থিত সন্ত্রাসী রিহান সেখানে উত্ত্যক্ত করে।

২০ ডিসেম্বর বেলগাছিতে শাহাদাত মেম্বারকে হুমকি ও বাড়ি ঘেরাও করে। পরে আলমডাঙ্গা থানা থেকে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

আরো জানা গেছে, গত ২১ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মুন্সিপাড়া মোড়ে ঈগল প্রতীকের প্রচার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ বিষয়ে সদর থানায় অবহিত করা হয়েছে।

পরদিন খাদিমপুর প্রাইমারি স্কুলের সামনে ঈগল প্রতীকের পোস্টা ছিঁড়ে ফেলা হলে বিষয়টি নিকটস্থ ফাঁড়িকে অবহিত করা হয়।

একইদিন (২২ ডিসেম্বর) চুয়াডাঙ্গা একাডেমি মোড়ে ঈগল প্রতীকের কর্মীকে কুপিয়ে জখম করে। এ বিষয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

২৩ ডিসেম্বর শঙ্করচন্দ্র এলাকায় নির্বাচনী প্রচারনায় বাধা দিলে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। একইদিন নতুন ভান্ডারদহে দিলীপ কুমার আগরওয়ালার উপর হামলা করে নৌকার সমর্থকরা।

এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ২৪ ডিসেম্বর সাতগাছি মাজেরপাড়া ৭ নং ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাইয়ের ওপর হামলা চালালে চুয়াডাঙ্গা থানা থেকে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার ও দুইজনকে আটক করে।

একইদিন নগর বোয়ালিয়ায় পোস্টা ছিঁড়ে ফেলা ও দুটি আলম সাধু ভাঙচুর করার পাশাপাশি ঈগল সমর্থকের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়। এঘটনায় আলমডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের হয়।

এছাড়া ২৫ ডিসেম্বর মাথালডাঙ্গা ইউনিয়নের মাথালডাঙ্গা গ্রামে ঈগল প্রতীকের পোস্টা, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হলে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

২৭ ডিসেম্বর শঙ্করচন্দ্রের মাঝেরপাড়ায় ঈগল প্রতীকের প্রচার গাড়ি ভাঙচুর এবং চালককে হত্যাচেষ্টায় আক্রমন করা হয়। পরে সদর থানায় মামলা করা হয়।

একইদিন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডে ঈগল প্রতীকের কর্মীকে প্রাণহানির চেষ্টায় হামলা করা হয়। পরে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

এভাবে প্রতিদিনই একাধিক স্থানে ঈগল প্রতীকের কর্মীদের ওপর ওপর হামলা চালাচ্ছে নৌকা প্রতীকের কর্মীরা। এতে এলাকার নির্বাচনী পরিবেশ ব্যহত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রশাসনকে আরো তৎপর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারন ভোটাররা।

-শিশির

FacebookTwitter