আধুনিক প্রযুক্তির ৩৭টি গাড়ি যুক্ত হচ্ছে ডিএমপিতে

আধুনিক প্রযুক্তির ৩৭টি গাড়ি যুক্ত হচ্ছে ডিএমপিতে
আধুনিক প্রযুক্তির ৩৭টি গাড়ি যুক্ত হচ্ছে ডিএমপিতে

আইন আদালতঃ
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় আধুনিক প্রযুক্তির ৩৭টি নতুন গাড়ি পাচ্ছে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ।

৩০৯ কোটি ৪৮ লাখ ২৯ হাজার টাকায় গাড়িগুলো কেনা হবে। ভ্যাটসহ প্রতি গাড়ির গড় দাম পড়বে ৮ কোটি টাকার বেশি। ভ্যাটছাড়ের বিষয়ে আইনি এখতিয়ার না থাকায় শুল্ক কর্তৃপক্ষকে গাড়িপ্রতি ক্রয়মূল্যের ৮ গুণ টাকা ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে।

প্রয়োজনীয় সুরক্ষিত যানবাহন ও লজিস্টিক সাপোর্টের অভাবে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানে অধিকাংশ সময় হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। প্রতিকূল এ অবস্থা মোকাবিলার জন্য ৩৭টি অত্যাধুনিক যানবাহন কেনার প্রকল্প চলমান রেখেছে বাংলাদেশ পুলিশ। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পে ৩৭টি গাড়ি কিনতে খরচ পড়বে ৩০৯ কোটি ৪৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা।

২০১৯ সালে একনেক সভায় পাস হওয়া প্রকল্পটির মূল ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এরইমধ্যে প্রকল্পের পেছনে ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ৫৩ কোটি ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। ২০২২ সালে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ না হওয়ায় এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

গাড়ি কেনার পেছনে নতুন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৯ কোটি ৪৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে মূল প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয়ের চেয়ে সংশোধনী প্রকল্পে ব্যয় বাড়বে ২২৯ কোটি ৮২ লাখ ১১ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় কেনা হবে ১২টি আর্মড ভেহিকল, ২০টি এসকর্ট ভেহিকল এবং ৫টি ফ্লাড লাইট ভেহিকল। প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর ফলে এখন অত্যাধুনিক একটি গাড়ি কিনতে খরচ পড়বে ৮ কোটি টাকার বেশি।

প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে— মূল ডিপিপিতে প্রকল্পের আওতায় সবগুলো গাড়িকে ‘স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু শুল্ক কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র ফ্লাড লাইট ভেহিকলকে ‘স্পেশাল পারপাস ভেহিকল’ হিসেবে বিবেচনা করেছে। এক্ষেত্রে আর্মড ভেহিকল ও এসকর্ট ভেহিকলকে ‘বেস ভেহিকল’ বিবেচনা করেছে। এ ক্ষেত্রে ভেহিকল মূল্যের ৮২৬ শতাংশ ভ্যাট ধার্য করা হয়েছে।

প্রকল্পের শুরু থেকে গত জুন পর্যন্ত মোট ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ৫৩ কোটি ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ ব্যয় ৬৭ শতাংশ। বাস্তব অগ্রগতি ৬৩ শতাংশ। এ অবস্থায় বাড়ছে ব্যয় ও মেয়াদ। ফলে চার বছরের প্রকল্প বাস্তবায়নে লাগবে পাঁচ বছর।

প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সাবেক সদস্য (সচিব) ও বর্তমান পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বাড়বে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ও জননিরাপত্তা করা সম্ভব হবে। তাই প্রকল্পটির সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদনযোগ্য।’

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ২২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন শেষ করবে বাংলাদেশ পুলিশ।’

প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশকে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হয়। প্রয়োজনীয় সুরক্ষিত যানবাহন ও লজিস্টিকসের অভাবে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে কখনও কখনও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। এ জন্য বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধিও জন্য ইকনোমিক অ্যান্ড সোস্যাল ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় জাপান সরকার ৫০০ মিলিয়ন ইয়েনের সমপরিমান অনুদান সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জাপান সরকারের অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এর আওতায় পুলিশের অধীনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ৩৫টি স্পেশাল পারপাস ভেহিকল সংগ্রহের জন্য মূল প্রকল্পটি ৭৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়।

২০১৯ সালের জুলাই হতে ২০২১ সালের জুনে বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ২৫ জুন একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।

-আরপি

FacebookTwitter