‘অনলাইনঃ

পরিবার-বন্ধু-বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এমন সমন্বিত উদ্যোগই আত্মবিধ্বংসী পথ থেকে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে পারে বলে মনে করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আত্মহত্যা প্রতিরোধে কাউন্সেলিংসহ শিক্ষার্থীদের বোঝানোর জন্য একটি প্যানেল তৈরি করতে হবে।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

কারণ, ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ঢাবিতে অন্তত ১৭ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করলেও চলতি বছরের ১১ মাসে আত্মহত্যা করেছেন ৯ শিক্ষার্থী। শুধু গত ১২ থেকে ১৬ই নভেম্বরের মধ্যেই আত্মহত্যা করেছেন ৩ শিক্ষার্থী।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী হুজাইফা রশিদ আত্মহত্যা করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যার পথে যাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হবে, আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়।

তিনি বলেন, পরিবার, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের সমন্বয়ে আমরা আত্মবিধ্বংসী পথ থেকে শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনতে পারি, এজন্য সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

‘শিক্ষার্থীদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের পক্ষ থেকে যদি আমাদের জানানো হয় ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছে তাহলে আমরা সমন্বিতভাবে এগিয়ে আসতে পারি, পাশে দাঁড়াতে পারি।

গোলাম রব্বানী বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের যে সাপোর্ট সিস্টেমগুলো আছে (কাউন্সেলিং সিস্টেম, ক্লিনিক্যাল ডিপার্টমেন্ট, স্টুডেন্ট অ্যাডভাইজার, সাইক্যোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট, প্রক্টরবডি আছে, প্রত্যেক হলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক) তারা সবাই শিক্ষার্থীদের পাশে আছে।
অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী

একাডেমিক চাপ থেকে অনেক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করছে বলে তাদের পরিবারের অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, সত্যিকার অর্থে গবেষণার ছাড়া একক কোনো বিষয়কে চিহ্নিত করা মুশকিল।

‘পাশাপাশি নিশ্চয়ই কোনো বিষয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে কাজ করে, যার জন্য তারা মানসিকভাবে এ ধরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে যায়। আত্মহত্যা তো পরিকল্পনা করে না, তাৎক্ষণিকভাবে ঘটিয়ে ফেলে। তাই একক কোনো বিষয় চিহ্নিত করে অগ্রসর হওয়া ঠিক হবে না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের ‘ডেমোগ্রাফি অ্যান্ড রিস্ক ফ্যাক্টর অব সুসাইড ইন বাংলাদেশ শীর্ষক এক গবেষণায় (নভেম্বর ২০১৬-এপ্রিল ২০১৭) উল্লেখ করা হয়, যারা আত্মহত্যা করেছে তাদের ৬১ শতাংশের বয়স ত্রিশের নিচে। আর এদের ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের আত্মহত্যার কারণ মানসিক বিষণ্ণতা, বেকারত্ব, প্রেম এবং পারিবারিক কলহ।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও মনস্তাত্ত্বিক প্রধান ডা. মোহিত কামাল চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, শিক্ষার্থী নানা রকম কষ্ট, প্রেমে ব্যর্থ, একাকীত্ব, বিষণ্ণতা, পরীক্ষার ফলাফল খারাপ ইত্যাদি বিষয়ে ভুগে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটাচ্ছে।

-পিকে

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily