ভবিষ্যতের জন্য ডায়াবেটিস সচেতনতায় জোর বিশেষজ্ঞদের

ভবিষ্যতের জন্য ডায়াবেটিস সচেতনতায় জোর বিশেষজ্ঞদের
ভবিষ্যতের জন্য ডায়াবেটিস সচেতনতায় জোর বিশেষজ্ঞদের

শিশির মোজাম্মেলঃ
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধে আরো জ্ঞান বিনিময়ের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ।

সোমবার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বারডেম মা ও শিশু হাসপাতালে আলোচনা সভায় শিশুদের ‘টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস থেকে সুরক্ষায় চিকিৎসাসেবায় আরো অভিজ্ঞাতা বাড়ানোর কথা বলেন বক্তারা।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সাথে যৌথভাবে ‘চেঞ্জিং ডায়াবেটিস ইন চিল্ড্রেন (সিডিআইসি)’ কর্মসূচীর এই ভিন্নধর্মী আয়োজন করেছে ডেনমার্ক ভিত্তিক ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নভো নরডিক্স।

আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এসট্রাপ পিটারসেন, নন-কমিনিকেবল ডিজেসের লাইন ডিরেক্টর রোবেদ আমিন।

বক্তাগণ ডায়াবেটিসের ঝুঁকির কারণ গুলো সকলের সচেতনাতর জন্য তুলে ধরেন। যার মধ্যে পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীর চর্চার অভাব অন্যতম।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সিডিআইসির পরামর্শক সমন্বয়ক বেদোয়ারা জাবিন, বারডেম মহাপরিচালক অধ্যাপক কাইউম চৌধুরী, বাংলাদেশ ডায়বেটিস সমিতির সাধারন সম্পাদক সাইফ উদ্দিন এবং নভো নরডিক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট এন্ড জেনারেল ম্যানেজার রাজর্ষী দে সরকার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ খান জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে এবং ২০৪৫ সালের মধ্যে যা প্রায় ২ কোটি ২ লাখ হবে।

এই প্রসিদ্ধ চিকিৎসক মনে করেন, প্রায় বেশীরভাগেরই জানে না তাদের ডায়াবেটিস আছে, যা তাদের সাস্থের ঝুঁকি বাড়ায়।

নভো নরডিস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট এন্ড জেনারেল ম্যানেজার রাজর্শী দে সরকার বলেন, নিত্য নতুন উদ্ভাবন ও মানসম্পন্ন ঔষধ নিয়ে আসার মাধ্যমে বাংলাদেশে মানুষের ডায়াবেটিস চিকিৎসায় পরিবর্তন আনতে নভো নরডিস্ক প্রতিজ্ঞাবদ্ধ. নিম্ন ও মধ্য অর্থনীতির দেশসমূহে ‘চেঞ্জিং ডায়াবেটিস ইন চিল্ড্রেন’ প্রচারনার আওতায় শিশু ও কিশোর কিশোরীদের টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের উন্নত চিকিৎসার জন্য জীবন বাঁচানোর ঔষধের প্রাপ্তি নিশ্চিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নভো নরডিক্স।

এই উদ্যোগের প্রাথমিক উদ্দ্যশ্য হলো দেশগুলোর জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোতে ডায়াবেটিস সেবার মান উন্নতকরন এবং শিশুদের টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসর ক্ষেত্রে বিশেষ সেবা উন্নয়ন।

নভো নরডিস্ক বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট এন্ড জেনারেল ম্যানেজার রাজর্শী দে সরকার বলেন, বিশ্বব্যাপী নভো নরডিস্কের ১০০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে ৬৫ বছরের উপস্থিতি।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মানসম্পন্ন ঔষধ সরবরাহ ও সাশ্রয়ী সেবা প্রদানে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতি ও অন্যান্য সংস্থার সাথে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে ড্যাব, বিশ্ব ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশনের সাথে যৌথভাবে ‘সিডিআইসি’ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে নভো নরডিক্স।

সারা দেশে ডায়াবেটিস সমিতি এবং ন্যাশনাল হেলথকেয়ার নেটওয়ার্কের আয়োজনে বিনামুল্যে ডায়াবেটিস নির্নয় ও সচেতনতা কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে নভো নরডিক্স।

সোমবার সকালে রাজধানীর রমনা পার্কে মানব বন্ধন পরবর্তী আলোচনায় আসন্ন মহামারী প্রতিরোধে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে সচেতনাতর উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বক্তারা।
আলোচনায় অংশগ্রহন করেন চিকিৎসক, নার্স ও ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ। এবারে দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘আগামীতে নিজেকে সুরক্ষায় ডায়াবেটিসকে জানুন’।

কর্মসূচীটির উদ্বোধন করেন বারডেমের মহাপরিচালক প্রফেসর কাইয়ুম চৌধুরী ও একাডেমিক পরিচালক ফারুক পাঠান। আরো উপস্থিত ছিলেন, ডায়াবেটিস সমিতির পরিচালক ফরিদ কবির ও নভো নরডিস্ক বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট এন্ড জেনারেল ম্যানেজার রাজর্শী দে সরকার।

আলোচকগন জানান, ক্লান্তি, অবসন্নতা, ওজন হ্রাস, পিপাসা ও ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব ডায়াবেটিসের লক্ষণ এবং এ সকল বিষয় সকলের অবগত থাকা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয় নভো নরডিক্সের অর্থায়নে, সিডিআইসি কর্মসূচীর মাধ্যমে শিশু ডায়াবেটিস রোগীরা বিনামূল্যে ইনসুলিন পাচ্ছেন।

বর্তমানে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, ফরিদপুর ও ডিনাজপুর এ তিনটি ক্লিনিকে এই সেবা পরিচালনা করা হচ্ছে।

-শিশির

FacebookTwitter