শিক্ষাঃ
খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও নর্থ সাউথের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য অধ্যাপক মুসলেহউদ্দিন আহমেদের স্মৃতিগ্রন্থ ‘দ্য ব্রিজ ওভার ট্রাবল্ড ওয়াটার’ প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে অধ্যাপক মুসলেহউদ্দিনের অবদান ‘দ্য ব্রিজ ওভার ট্রাবল্ড ওয়াটার’ বইয়ে একজন মেয়ে হিসেবে বাবার ভূমিকা উপস্থাপন করেছেন লেখিকা সীমা আহমেদ।
শনিবার রাজধানীর সিক্স সিজন্স হোটেলে আয়োজিত প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সাজ্জাদ জহির। এই অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্নেল ভারতের সম্মানজক ‘পদ্মশ্রী’ পদকেও ভূষিত।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ের উপদেষ্টা ডক্টর গওহর রিজভী। ভিডিও মাধ্যমে আরো সংযুক্ত হন খ্যাতিমান সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, (বাবার প্রতি) ভালোবাসার অসামান্য অর্জন ও শ্রম প্রকাশ পেয়েছে এই প্রকাশনায়।
ইতিহাস চর্চায় একটি জীবনীগ্রন্থ থেকে এটা অনেক বেশি কিছু।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কলামিস্ট ডক্টর মিল্টন বিশ্বাস, বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ ডক্টর সেলিম রশিদ, ব্যবসায়ী সৈয়দ আখতার হাসান উদ্দিন এবং এপিপিএলের প্রকাশক আহমেদ সরোয়ারুদ্দৌলা ।
ডক্টর সেলিম রশিদ বলেন, বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বাবার ( অধ্যাপক মুসলেহউদ্দিন) স্বপ্নের কথাটা বেশ ভালোভাবে উপস্থাপন করেছেন তার মেয়ে সীমা।
বইটির শব্দ বিন্যাসে অধ্যাপক মুসলেহউদ্দিনের অজানা গল্পের বিন্যাসের পাশাপাশি ‘বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে উচ্চ শিক্ষার পথিকৃৎ’ হিসেবে স্মৃতি কথা তুলে ধরেছেন লেখিকা সীমা।
সীমা আহমেদ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধচলাকালে বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণায় প্যারিসে নিজের বাসায় বাংলাদেশের দূতাবাস চালু করেন অধ্যাপক মুসলেহউদ্দিন।
লেখকের ভাষ্য অনুযায়ী বইটিতে অধ্যাপক মুসলেহউদ্দিন আহমেদের জীবনের শৈশব থেকে শুরু করে কূটনীতিক পেশা, মুক্তিযুদ্ধ অবদান এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে অর্জনের গল্পগুলো উঠে এসেছে।
দ্য ব্রিজ ওভার ট্রাবল্ড ওয়াটার বইয়ে পারিবারিক পর্যায় থেকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অজানা ইতিহাসের মেলবন্ধনের চেষ্টা করেছেন লেখিকা।
লেখিকা সীমা আহমেদ বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। উচ্চমানের শিক্ষা প্রদানের স্বপ্ন নিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
মাত্র ১৩৭ জন শিক্ষার্থী ও ১০ জন্য শিক্ষক নিয়ে ১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে ৯৭ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালু আছে যেখানে ৩ লক্ষ ২৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে ১৬ হাজার ২৭৭ জন শিক্ষকের তত্বাবধানে।
পাশাপাশি ৫০ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থী পরাশুনা করছে। এই ১৪৭ টি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে যোগ্য মানব সম্পদ সরবারাহ করছে।
ব্যবসায় প্রশাসনে উচ্চ শিক্ষায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চমানের ডিগ্রি প্রদান করে বলে দাবি করেন সীমা।
লেখিকা আরো বলেন, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরী করতে ভূমিকা রেখেছে।
তিনি জানান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়স আরবানার অনুমোদন ও পর্যালোচনায় ডক্টর সেলিম রশীদের সাথে একসাথে কাজ করেছেন অধ্যাপক মুসলেহউদ্দিন।
সীমা বলেন, পাশাপাশি নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষাক্রম উন্নয়নে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন ও পর্যালোচনায় তিনি তার বড় ছেলে ডক্টর জুনায়েদ আহমেদ, জামাতা ডক্টর সাঈদ আহমেদের সাথেও কাজ করেন।
বইটির প্রকাশনা আয়োজনে সহযোগিতা করে নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
তাদের মধ্যে জারটাইলসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শায়ক আহমেদ, রুপসা টায়ারসের পরিচালক মিরাজ রহমান, রিপাবলিক অব কঙ্গোর কনসুলেট ও টপ অব মাইন্ডের সিইও জিয়াউদ্দিন আদিল, হাইভোল্টেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনতাসির রশীদ, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের জৈষ্ঠ্য পরিচালক আমিনুল এহসান এবং সিটি ব্যাংক এর পরিচালক শামস জামান অন্যতম।
লেখিকা সীমা আহমেদ একজন নির্বাচনী পরামর্শক। তিনি আমেরিকার বারাক ওবামা ও জো বাইডেনের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রচারনার সংগঠকের ভূমিকায় ছিলেন। সে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারের সাথেও কাজ করেছেন।
সীমা আহমেদ ‘প্যারিস’ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। প্যারিস মানে পিটিক্যাল এক্টিভিজম, রিলিফ এবং ইন্সটিটিউশনাল স্টার্টআপ।
প্রতিষ্ঠানটি (parisforjustice.org) বাংলাদেশে শিশুদের ক্ষুধা ও খাদ্যে বিষাক্তকরনের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রচারনার কাজ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী সীমা আহমেদ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় ও সরকারি নীতির উপরে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করেছেন।
-শিশির