অনলাইনঃ
জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মৃত্যুতে ৩ দিনের দলীয় শোক ঘোষণা করেছে দলটি।
শনিবার (২ অক্টোবর) সকাল ৯টা ১২ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি স্ত্রী ও এক ছেলেসহ অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী এবং রাজনৈতিক অনুসারী রেখে গেছেন।
জাপা চেয়ারম্যানের ‘প্রেস সেক্রেটারি ২’ খন্দকার দেলোয়ার জালালী তার মৃত্যু খবর জানিয়ে বলেন, শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত জাতীয় পার্টির প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ে দলীয় ও কালো পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
রবিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কাকরাইল চত্বরে জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মৃত্যুতে শোক সভা অনুষ্ঠিত হবে।
শোক সভায় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ পার্টি শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
পার্টি ঘোষিত তিন দিনের শোক দিবসের মধ্যে বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কার্যালয়ে শোকসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
এদিকে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু’র মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
এক শোকবার্তায় প্রয়াত নেতার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জাতীয় সংসদের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ইংরেজিতে বিএ এবং এমএ সম্পন্ন করা বাবলু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেছেন।
১৯৭৪-৭৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। সেসময় তুমুল প্রতাপশালী এই ছাত্রনেতা ১৯৮২-৮৩ সালে ডাকসুর জিএস নির্বাচিত হন।
১৯৮৫-৮৬ সালে এরশাদ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হন। এরপর ১৯৮৬-৮৭ সালে তিনি বন্দর ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের (তৎকালীন) উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন। ওই বছরই তিনি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পরে আবার তার দফতর পরিবর্তন করে দেওয়া হয় এরশাদ সরকারের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
২০১৪ সালে (চট্টগ্রাম-৯) আসন থেকে দশম জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন বাবলু। ওই বছর জাতীয় পার্টির মহাসচিবের দায়িত্ব পান তিনি। ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০২০ সালের জুলাই মাসে মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁকে নিয়ে দলে অস্থিরতা দেখা দিলে তাকে হটিয়ে বাবলুকে আবার মহাসচিবের দায়িত্বে নিয়ে আসেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এরশাদের নির্দেশে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর প্রথম স্ত্রী ফরিদা সরকার ২০০৫ সালে মারা যান। পরে ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি এরশাদের ভাগ্নি মেহেজেবুন্নেসা টুম্পাকে বিয়ে করেন।
রাজনীতির পাশাপাশি বেসরকারি ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এছাড়াও ফার্স্ট কমিউনিকেশন লিমিটেড ও হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্টারন্যাশনাল নামে দুটি প্রতিষ্ঠানেরও চেয়ারম্যান ছিলেন এই রাজনীতিবিদ।
-কেএম