শিল্প ও সাহিত্যঃ
বইমেলায় ‘বঙ্গবন্ধু মানিক মিয়া সম্পর্ক’ নামের গ্রন্থ প্রকাশ করেছে পাঠক সমাবেশ। বইটির লেখক ড. সুনীল কান্তি দে।
মানিক মিয়া ও বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর। বঙ্গবন্ধুর একাধিক লেখায় সেই সম্পর্কের গভীরতার পরিচয় পাওয়া যায়। দুজনের শুধু ব্যক্তি সম্পর্ক নয়, রাজনৈতিক মতাদর্শও ছিল এক ও অভিন্ন। সে কারণে তাদের সম্পর্ক আরো গভীরতা পেয়েছিল।
তাদের সম্পর্কের যোগসূত্রের এই রাজনৈতিক দিকটিই বইটিতে প্রাধান্য পেয়েছে। বিভিন্ন লেখা ও বর্ণনায় সেই দিকটিকেই তুলে এনেছেন লেখক।
অবিভক্ত বাংলায় কলকাতায় ছাত্ররাজনীতির সময় থেকেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার সম্পর্ক।
বঙ্গবন্ধু মানিক মিয়া প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘একটা বিষয়ে আমরা উভয় একমত ছিলাম এবং তা হলো, বাংলার স্বাধীনতা ভিন্ন বাঙ্গালীর মুক্তি নাই, এ বিষয়ে আমাদের মাঝে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবকাশ ছিল না। আর ছিল না বলেই নানা প্রতিঘাতের মধ্যেও দুজন দুই ফ্রন্টে কাজ করেছি। আমি কাজ করেছি মাঠে-ময়দানে আর মানিক ভাই তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর সাহায্যে।’
আরও পড়ুন:
মানিক মিয়ার মৃত্যুর পর তার স্মরণে বঙ্গবন্ধু এক লেখায় বলেছেন, ‘১৯৪৩ সন। মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর বাসভবনে কলকাতায় তাঁর সাথে আমার পরিচয়। একই নেতার দুই শিষ্য, যেন একটি পিতার দুই সন্তান। বিগত পঁচিশ বছরের মধ্যে কোনোদিনই আমরা বিচ্ছিন্ন হইনি, কোনো ঘটনা আমাদের মধ্যে বিভেদ টানতে পারেনি।’ পরিচয়ের পর থেকে ’৫২-র ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-র যুক্তফ্রন্ট, ’৬২-র ছাত্র আন্দোলন ও সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান প্রভৃতি আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থেকেছেন মানিক মিয়া। বঙ্গবন্ধু তাকে ‘মানিক ভাই’ বলে সম্বোধন করতেন। মানিক মিয়ার পরামর্শকে বঙ্গবন্ধু সব সময় গুরুত্ব দিয়েছেন। মানিক মিয়ার মৃত্যুর (১ জুন ১৯৬৯) আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সেই সম্পর্ক অটুট ছিল। আন্দোলন-সংগ্রামে রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে পরামর্শ, উভয়ের মধ্যে পত্রযোগাযোগ, বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকে এগিয়ে নিতে মানিক মিয়ার দৈনিক ইত্তেফাক তথা মোসাফিরের রাজনৈতিক কলাম ‘রাজনৈতিক মঞ্চ’-এর ভূমিকা প্রভৃতি আলোচিত হয়েছে এ গ্রন্থে।
আরও পড়ুন:
এ প্রসঙ্গে বইটির লেখক ড. সুনীল কান্তি দে বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদ ২০১৮ সালে ‘বঙ্গবন্ধু মানিক মিয়া সম্পর্ক’ নিয়ে প্রবন্ধ পড়ার জন্য আহ্বান করেছিল। তাদের কলকাতায় সম্মেলনে সেটা পাঠ করি। এরপর সেই প্রবন্ধকে অবলম্বন করে বই করার উদ্যোগ নিই। বইটি নিয়ে গত তিন বছর ধরে কাজ করছি। বইটি প্রকাশের পর আরো বেশ কিছু তথ্য আমি পেয়েছি, যেটা পরবর্তী সংস্করণে যুক্ত করতে চাই। বইটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯৫ টাকা।
-ডিকে