গণমাধ্যমঃ
সৃজনশীল দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং বিকাশের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্ত জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) ‘ক্রিয়েটিভ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিল’ (সিএমআইএসসি) শীর্ষক এক মনোনীত কাউন্সিলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছে।
সিএমআইএসসি’র মূল লক্ষ্য সাংবাদিকতা (সকল মিডিয়া), সঙ্গীত শিল্প , পারফর্মিং আর্টস (অভিনয়, নৃত্য, আবৃত্তি ইত্যাদি), চলচ্চিত্র ও টিভি শিল্প (বিনোদন), থিয়েটার, গ্রাফিকস ডিজাইন এবং অ্যানিমেশন, কনটেম্পোরারি আর্ট, সাহিত্য ও কবিতা এবং বিজ্ঞাপনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সৃজনশীল দক্ষতা বৃদ্ধি, মেধাবীদের তৈরি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ মিলনায়তনের মাল্টি-পারপাস হলে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সালমান এফ রহমান, এমপি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি; মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনএসডিএ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) জনাব দুলাল কৃষ্ণ সাহা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জনাব সালমান এফ রহমান, এমপি বলেন, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাজ কি হবে তা নিয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রথম থেকেই কাজ করে আসছি। ক্রিয়েটিভ মিডিয়া ও টেকনোলজির মিশ্রণেই ক্রিয়েটিভ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি স্কিল কাউন্সিলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে। আমাদের টেকনোলজি বেশ এগিয়ে আছে যা আপনাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরী করবে।
এই কাউন্সিলের অগ্রগতির জন্য জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সর্বদা পাশে থাকবে।
মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ক্রিয়েটিভ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি স্কিল কাউন্সিলের যে যাত্রা আরম্ভ হয়েছে তা ফলপ্রসু হবে বলে আমি মনেকরি। ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলেশনে অংশ নিতে দক্ষতা অর্জনের কোন বিকল্প নেই। আমাদের সরকার নতুন উদ্ভাবনকে সর্বদা স্বাগত জানিয়েছে। আশাকরি ক্রিয়েটিভ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি স্কিল কাউন্সিলের সহযোগিতায় ২০৪১ এর আগেই জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগটি তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হবে।
বিশেষ অতিথি জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এমন একটি সময়ে আমরা ক্রিয়েটিভ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি স্কিল কাউন্সিলের উদ্বোধন করছি যখন আমরা বাংলাদেশের সূবর্ণ জয়ন্তী ও জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পালন করছি। সরকারি,বেসরকারি ও একাডেমিক খাত একত্রে কাজ করে যাচ্ছে বলেই আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশ। এখন আমরা আছি ডিজিটাল ইকোনোমিতে কিন্তু চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অংশ নিতে আমাদের ক্রিয়েটিভ ইকোনোমিতে পা রাখতে হবে। আমরা আত্মনির্ভর হতে চাই, আত্মকেন্দ্রিক নয়।
শমী কায়সার বলেন, করোনার সময়ে আমাদের দেশে ই কমার্স যেভাবে প্রসারিত হয়েছে ই ইন্টারটেইনমেন্টেও এই প্রসারণ আসবে। আমরা মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে নেটফ্লিক্স এর বিকল্প প্লাটফর্মের সূচনা করতেই পারি।
২০১৮ সালে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) প্রতিষ্ঠিত হয়। এর লক্ষ্য ভবিষ্যতে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের দক্ষ জনগোষ্ঠীর চাহিদার পূর্বাভাস প্রকাশ; আইএসসি পরিচালনা এবং শিল্প সংযোগ জোরদার, শিক্ষানবিসি ব্যবস্থা জোরদার করা, দক্ষতা প্রদানকারী সকল প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন; এসটিপির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিবীক্ষন ও মূল্যায়ন; দক্ষতা সংক্রান্ত সকল প্রকল্প পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয়কর; সক্ষমতা ভিত্তিক পেশাগত দক্ষতামান প্রণয়ন; একক উৎস থেকে অভিন্ন সনদায়ন; এমআরএ এবং আরপিএলের ব্যবস্থা করন এবং এ সকল লক্ষ্য অর্জনে যেখানে প্রয়োজন সেখানে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।
সিএমআইএসসি’র লক্ষ্য দেশের সৃষ্টিশীল ক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদের বিকাশ নিশ্চিত করা। যা, এক্ষেত্রে, সুচারুভাবে কাজ করার জন্য যথাযথ জ্ঞানসম্পন্ন পর্যাপ্ত জনশক্তির প্রয়োজনীয়তা এবং আগামী দিনে আরও প্রসার লাভ করতে এই খাতে উদ্যোক্তা তৈরির গুরুত্ব তুলে ধরে।
ক্রিয়েটিভ প্রোডাকশনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈশ্বিক চিত্রের দ্রুত উন্নতি ঘটার সাথে সাথে ক্রিয়েটিভ মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের স্থানীয় চাহিদাও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। এক্ষেত্রে, দেশীয় বাজারগুলোতে বিলিয়ন আয় হচ্ছে এবং সিএমআইএসসি ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আশা করা যাচ্ছে, সিএমআইএসসির সুদক্ষ পরিচালনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মূল চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করতে এবং শক্তিশালী মিডিয়ার মাধ্যমে এর দৃঢ় মোকাবেলায় এই ইন্ডাস্ট্রিকে সহায়তা করতে কাউন্সিলটি তার এজেন্ডাসমূহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সাথে সামঞ্জস্য করে তৈরি করেছে। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে তরুণদের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটবে এবং ভিশন ২০৪১ অর্জনের লক্ষ্যে দেশের এগিয়ে যাওয়ার গতি ত্বরান্বিত হবে।
আরও পড়ুন:
কাউন্সিলটিতে ১৪ জন স্বনামধন্য শিল্প ব্যক্তিত্ব সমন্বিত একটি পরিচালক প্যানেল রয়েছে। এদের মাঝে রয়েছেন শমী কায়সার (চেয়ারম্যান); সৈয়দ আপন আহসান (ভাইস চেয়ারম্যান); সাব্বির রহমান তানিম (সাধারণ সম্পাদক) এবং এ.এস.এম. রফিক উল্লাহ (কোষাধ্যক্ষ)।
-শিশির