সারাদেশঃ
তিন লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের (নৌকা প্রতীক) প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
গতকাল ২৭ জানুয়ারি, বুধবার সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে একটানা বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট।
গতকাল সন্ধ্যায় নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম হলে ফলাফল ঘোষণা শুরু করেন রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
তিনি ৭৩৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩৩টির ফলাফল ঘোষণা করেন। বাকি দুইটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়।
এদিকে নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র দখল নিতে প্রকাশ্যে গোলাগুলি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ-সহিংসতা, প্রাণহানি, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ভাঙচুর, বর্জনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভোটগ্রহণ শুরুর পরপরই সকালে একজন নিহত হন।
নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। অপরদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দাবি, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে। নির্বাচনী কর্মকর্তারাও ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং ৪১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মোট প্রার্থী ছিলেন ২২৬ জন। এর মধ্যে ৩৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন ১৬৯ জন। প্রার্থীর মৃত্যুসহ বিশেষ কারণে দুই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের নির্বাচন স্থগিত আছে। সংরক্ষিত ১৪টি ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৫৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মেয়র পদে ছিলেন মোট সাতজন প্রার্থী। এরা হলেন—আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী, বিএনপির ধানের শীষের ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়াও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি’র আম প্রতীকের আবুল মনজুর, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন (মোমবাতি), স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা)।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৭৮ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭২৩ ও নারী ভোটার ৯ লাখ ৫২ হাজার ৩২৯ জন।
নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরীর জন্ম ১৯৫৩ সালে। তিনি চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন জমিদার বংশ বহরদার পরিবারের সদস্য।
১৯৬৭ সালে কলেজের ছাত্র থাকাবস্থায় রেজাউল করিম চৌধুরী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সদস্য হন। এর মাধ্যমেই রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি।
১৯৬৯-১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৭০-১৯৭১ সালে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ছাত্রাবস্থায়ই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
-ডিকে