সারাদেশঃ
এবার রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারের আশুলিয়ায় দুই বান্ধবীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ অভিযোগে ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অভিযুক্ত আরো ৯ কিশোর পালিয়ে আছে।
আজ ৭ অক্টোবর, বুধবার ভোররাতে আশুলিয়ার ভাদাইল ও নয়ারহাট এলাকা থেকে ওই তিন জনকে আটক করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসওয়াদুর রহমান এ সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আটকরা হলো—পান রাকিব (১৬), ডায়মন আলামিন (১৪) ও জাকির (১৩), রেদোয়ান । এদের মধ্যে পান রাকিব মাঝেমাঝে ভাদাইল এলাকায় শাক বিক্রি করে। বাকি দুই জন শিক্ষার্থী। এখনো তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। তবে তারা সবাই প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয়া।
এদের দলনেতা সারুফ, তার সহযোগী আলমিন, জিদান, রেদওয়ানসহ অন্যরা পলাতক রয়েছে।
জানা গেছে, মাসখানেক আগে একই বাসার ভাড়াটিয়া দুই কিশোরের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে ওই গ্যাংয়ের সদস্যদের কাছে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিল ভুক্তভোগী দুই বান্ধবী। তারা দুজনেই ভাদাইল এলাকায় ভাড়া থেকে চুল কারখানায় কাজ করতো।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া ইসরাফিল নামে এক কিশোর জানায়, প্রায় ৩৫ দিন আগে সে এবং একই বাসার ভাড়াটিয়া অপর কিশোরের সঙ্গে ওই দুই বান্ধবী ভাদাইলের গুলিয়ারচক এলাকায় বেড়াতে যায়।
এ সময় তাদের চারপাশ দিয়ে ঘিরে আটকে ফেলে প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের ১২-১৪ জন সদস্য। পরে ভুক্তভোগীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া দুই কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও মারধোর করে বসিয়ে রাখে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
পরে ওই দুই বান্ধবীকে একটু আড়ালে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে ১২ কিশোর। এসময় এ ঘটনার দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে রাখে তারা। সেই ভিডিও ফাঁস হয়ে পড়লে ভুক্তভোগী দুই বান্ধবী গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার প্রায় মাসখানেক পর ওই গ্যাংয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে ধারণ করা ভিডিও ফাঁস হয়ে যায়। এরপর গ্যাংলিডার সারুফের বাবা আকবর আলী প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের অন্যান্য সদস্যসহ অভিযুক্তদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে স্থানীয় মাতবর মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি, পুলিশ বিষয়টি জানতে পেয়ে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ থেকে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে তিন ধর্ষককে আটক করেছে।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসওয়াদুর রহমান বলেন, ‘ভিডিও ফাঁস হওয়ার পরপরই কোনো অভিযোগ না পেলেও তদন্তে নামে আশুলিয়া থানা পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে ওই গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে।’
বাকিদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
-কেএম