মিলি সুলতানা, নিউইয়র্ক থেকেঃ
“ছবিটিতে হুমায়ূন আহমেদের কিঞ্চিৎ ফ্লেভার পাওয়া গেছে।”
৬০ বছরের অমিতাভ বচ্চন স্ত্রী রেবতী (৫৫) এবং কন্যা রীতুকে (১৮) নিয়ে তার ছিমছাম গোছানো সংসার। ফটোগ্রাফি করা অমিতাভের শখ। মেয়ের বান্ধবী জিয়া (১৮) অস্ট্রেলিয়া থেকে ছুটি কাটাতে অমিতাভের বাড়িতে আসে। জিয়া অস্থির স্বভাবের খুব চঞ্চল মেয়ে। যা অমিতাভের ভালো লাগে। ব্রোকেন ফ্যামিলির মেয়ে জিয়া কোনোদিন তার বাবা মা’কে হেসে কথা বলতে দেখেনি। তাই সে বান্ধবীর বাবা মা’কে হাস্যোজ্জ্বল দেখলে অবাক হত। বান্ধবীর বাবার সাথে টি- এস্টেট ঘুরতে যায় জিয়া।
শুরুতে দেখানো হয় অমিতাভ পাহাড় থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরমধ্যে তিনি ফ্ল্যাশব্যাকে নিয়ে যান দর্শকদের। তিনি কনফেস করেন মেয়ের বন্ধুর প্রেমে পড়া তার জন্য খুব কঠিন ব্যাপার ছিল। কিন্তু প্রেম হয়ে গিয়েছিল। জিয়া যখন অমিতাভের পরিবারের সাথে থাকতে আসে, বান্ধবীর মা রেবতী তাকে মেয়ের মত আদর স্নেহ করেন। মেয়ের বান্ধবীর প্রেমে পড়ে আমিতাভের মধ্যে অলৌকিক পরিবর্তন আসে — তিনি গুনগুনিয়ে গান গাইতে শুরু করেন। স্ত্রী রেবতী আশ্চর্য হন, তাঁর ২৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে স্বামীকে একলাইনও গাইতে দেখেননি। তবুও রেবতী এসব পাত্তা দেননি। একদিন রুমে একা পেয়ে জিয়া অমিতাভকে জানায় সে তাকে ভালোবেসে ফেলেছে। জীবনে অমিতাভের মত পুরুষকে তার প্রয়োজন। জিয়া প্রশ্ন করে অমিতাভকে তাকে ভালোবাসে কিনা। অমিতাভ স্বীকার করেন হ্যাঁ তিনি জিয়াকে ভালোবাসেন। রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে বাবার সাথে বান্ধবীর প্রেমালাপ শুনে ফেলে মেয়ে রীতু। সে বাবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। এমনকি বান্ধবীর সাথেও কথা বলেনা। শুধু একা একা কাঁদে। আর মাকে বলে, জিয়াকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে দিতে। রেবতী তার স্বামীর নতুন প্রেমে পড়ার কথা শুনে (তাও মেয়ের বান্ধবীর সাথে!!) স্তব্ধ হয়ে যান। বাড়িতে দম বন্ধ করা চাপা থমথমে পরিবেশ। অমিতাভের সাথে স্ত্রী কন্যা কথা বলেনা। অমিতাভ আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে জিয়াকে চলে যেতে বলেন। জিয়া যেতে চায়না, অমিতাভ তাকে ধমক দিয়ে চিৎকার করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। জিয়া চলে যায় তার পুরনো বয়ফ্রেন্ড আফতাব শিবদাসানির কাছে।
অমিতাভের মেয়ে সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকা চলে যাবে। বাবার প্রতি তার প্রচন্ড ঘৃণা প্রকাশ পায়।স্ত্রীও চলে যান তার ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের বাড়িতে। শেষ বয়সে অসম প্রেমের দায়ে অমিতাভ একা হয়ে পড়েন। সুইসাইড করতে গিয়েও করেননা। জিয়ার প্রেম নিয়ে শেষ দিনগুলো যাপন করার জন্য অমিতাভ থেকে যান তার নিঃশব্দ জগতে।
জিয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিয়া খান। ২০১৩ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে জিয়া খান আত্মহত্যা করেন। আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সুরাজ পাঞ্চোলির সাথে প্রেম ছিল তার। একসময় সুরাজ জিয়ার সাথে ব্রেক আপ করে। তখন অভিমান করে আত্মহননের আশ্রয় নেয় মেয়েটি। তার পুরো নাম নাফিসা রিজভী খান ওরফে জিয়া। নিঃশব্দ ছবিটি দেখে জিয়া খানের জন্য খুব খারাপ লেগেছে।
-শি