চীন থেকে লক্ষাধিক ভ্যাকসিন ফ্রি পাচ্ছে বাংলাদেশ

করোনা সংবাদঃ

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারীতে বিপর্যস্ত সারাবিশ্ব। তবে এই মহামারীই বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার ও শত্রুকে কাছে টানার সুযোগ হিসেবে হাজির হয়েছে চীনের সামনে।

এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা বলেছে চীন।

চীন আশ্বস্ত করেছে, দেশটির চারটি ভ্যাকসিন শেষ ধাপের ট্রায়ালে পৌঁছেছে। এর যেকোনো একটি ভ্যাকসিন নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণিত হলে তা সবাই সেগুলো পাবে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে এক লাখের বেশি ডোজ ভ্যাকসিন বিনামূল্যে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে চীন। এমন খবর প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

এই প্রতিবেদনে ভ্যাকসিনকে কেন্দ্র করে বিশ্বমঞ্চে চীনের নেতৃত্বের আসনে যাওয়ার আকাঙ্খা ও নানামুখী তৎপরতার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চিরবৈরী প্রতিবেশি ফিলিপাইন দ্রুত চীনের করোনা ভ্যাকসিন পাবে। ভ্যাকসিন কেনার জন্য চীনের কাছ থেকে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পাবে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ। চীনের একটি কোম্পানির কাছ থেকে বাংলাদেশ পাবে এক লাখের বেশি ডোজ।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) নির্বাহী পরিচালক ডা. জন ডি. ক্লেমেন্স বলেন, বেইজিংভিত্তিক ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সিনোভ্যাক বায়োটেক বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ৪ হাজার ২০০ স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে তাদের ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালাবে। এজন্য এই চীনা কোম্পানি বাংলাদেশকে বিনামূল্যে এক লাখ ১০ হাজারের বেশি ডোজ দিতে রাজি হয়েছে।

এদিকে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে অংশ নিলেও অনেক বাংলাদেশিদেরই আশঙ্কা, উচ্চ মূল্যের কারণে করোনার ভ্যাকসিন সবার কাছে নাও পৌঁছাতে পারে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, প্যাটেন্ট এবং মুনাফার কারণে যদি বিশ্বের একজন মানুষও করোনা ভ্যাকসিনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন, তাহলে এটি হবে এই শতাব্দির সবচেয়ে অবিচার।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গুরুত্বারোপ করে জানায়, ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করতে চাইবে না চীন। করোনার ভ্যাকসিনকে কূটনৈতিক অস্ত্র হিসেবে চীন ব্যবহার করার যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রত্যাখ্যানও করেছে বেইজিং।

এদিকে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের উদ্দেশ্য নিয়ে সতর্ক ভারত। নেপাল এবং বাংলাদেশকে চীন ভ্যাকসিন দেয়ার প্রস্তাব দেয়ার পর নয়াদিল্লিও একই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিছু কিছু দেশে চীনের বিকল্পও থাকতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চীন ভ্যাকসিন উৎপাদনের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে গেছে সেটি বলার সময় এখনো আসেনি। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়ে প্রতিবেশি ও বিভিন্ন অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে ভঙ্গুর প্রায় সম্পর্ক মেরামত এবং বন্ধুদেরকে আরো ঘনিষ্ঠ করে তোলার দিকেই বেশি মনযোগ দিচ্ছে চীন।

-কেএম

FacebookTwitter