আইন আদালতঃ
মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানকে গুলি করার আগে যেন শিকারের অপেক্ষায় ছিলেন ইন্সপেক্টর লিয়াকত। তিনি সহযোগী আরেক এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতকে নিয়ে ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ আগে বাহারছড়ায় আর্মড পুলিশের (এপিবিএন) চেকপোস্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। সেখানে থাকা এপিবিএন সদস্যদের কোনো কথাই বলতে দেননি তারা।
এ হত্যা মামলার আসামি ঘটনাস্থলে থাকা এপিবিএন সদস্য আব্দুল্লাহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল ২৬ আগস্ট, বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারহার আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
এপিবিএন সদস্য আব্দুল্লাহ এতে জানান, ঘটনার দিন অপেশাদার আচরণ করছিলেন ইন্সপেক্টর লিয়াকত। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, তিনি যেন শিকারের অপেক্ষা করছেন।
পাঁচ ঘণ্টা জবানবন্দি দেয়ার পর আব্দুল্লাহকে পুণরায় কারাগারে দিয়ে আসেন র্যাব সদস্যরা। সিনহা হত্যা মামলায় তিনিসহ আরো দুই এপিবিএন সদস্য র্যাবের রিমান্ডে আছেন। এরা হলেন এএসআই শাহজাহান ও কনস্টেবল রাজীব।
এরা তিনজনই ঘটনার দিন বাহারছড়া চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ১৮ আগস্ট তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক আইনে এবং রামু থানায় মাদক আইনে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করে। এ মামলায় নিহত মেজর সিনহার সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেবনাথকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
এরপর ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওসি প্রদীপ কুমার দাস, এসআই লিয়াকতসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৬ আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ৭ আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ সব মামলারই তদন্তভার এখন র্যাবের হাতে।
-কেএম