নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা : গত ২৪ ঘণ্টা ধরে দেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেল অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় সুপার সাইক্লোন আম্পানের। ব্যাপক শক্তি নিয়ে উপকূলীয় জেলাসমূহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বুধবার দুপুরের পর থেকেই তাণ্ডব শুরু করে আম্পান। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পর থেকে ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা বাড়তে থাকে। রাতভর চলে এই তাণ্ডবলীলা। আর তাতে করে এই আম্পানের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় এক কোটি মানুষ এখন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন।
জেলাভিত্তিক সরেজমিন থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, রাতভর আম্পানের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া বিদ্যুৎ সংযোগ মেরামতের কাজে নেমেছে বিতরণ সংস্থার লোকেরা। কিছু কিছু অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা গেলেও সেটি পরিমাণে খুবই কম। অনেক অঞ্চলে বড় বড় গাছ উপড়ে বিদ্যুতের তারের উপর পড়ে তার ছিঁড়ে গেছে। কোথাও কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের (আরইবি) সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অঞ্জন কান্তি দাশ বলেন, ‘আম্পানের আঘাতে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমাদের অনেক গ্রাহক। উপকূলের অধকাংশ জেলা এখন বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। আমরা সকাল থেকে মেরামতের কাজ শুরু করেছি। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠিসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে কিছু কিছু করে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। ঢাকার আশপাশেও আরইবি গ্রাহকদের অনেকে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, যশোর, খুলনা, বরিশালে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। অন্তত ২০০ টির মতো বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। অসংখ্য তার ছিঁড়ে গেছে।’
বর্তমানে আরইবির প্রায় ২ কোটি ৮৫ লাখের মতো গ্রাহক রয়েছে, আম্পানের প্রভাবে যাদের মধ্যে অন্তত ৮০ থেকে ৯০ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানান অঞ্জন কান্তি দাশ।
নিকট অতীতে এমন ঝড় কেউ দেখেনি বলে জানিয়েছেন উপকূলীয় এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক উদ্দিন। কোম্পানির অধীনে প্রায় ১২ লাখ গ্রাহক। যাদের অধিকাংশই এখন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।
আজ ৪৭ জনের মৃত্যু
এগিকে গ্রিডে বিদ্যুৎ থাকলেও বিতরণ লাইনের সমস্যার কারণে দেশে এ মুহূর্তে লাখ লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া। তাতে করে কোডিভ-১৯ চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হাসপাতালগুলো সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে বলেও জানান তিনি।
-এফকে