কমল পেঁয়াজ, রসুন, আদার দাম

বাজারে বেশ কমেছে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম। বেড়েছে সবজি ও মোটা দানার মসুর ডালের দাম। বিশেষ করে  দাম বেড়ে যেন নাগালছাড়া হয়েছে শুকনা মরিচ।

খুচরা বাজারে এখন এক কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।

পবিত্র রমজান মাস শুরু হতেই ১৬০ টাকা কেজির চীনা আদার দাম বেড়ে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। তা কমে এখন ২০০ টাকায় নেমেছে।

ঢাকার মিরপুর ৬ নম্বর সেকশন, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও পীরেরবাগ এলাকার ছোট-বড় বাজার ঘুরে এবং পাইকারি মোকাম কারওয়ান বাজার ও শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে বাজারের এমন চিত্র জানা গেছে।

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের একজন আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাস ঠেকাতে দেওয়া সাধারণ ছুটিতে পণ্যের সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছিল। এখন মোটামুটি সচল হয়েছে। এতে সরবরাহ বেড়েছে। ফলে দামও কমেছে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি শুরু হয়। এর পরপরই বাজারে সবজি, ডিম ও মুরগির দাম ব্যাপকভাবে কমে যায়। তবে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুনের দাম বাড়ে। এদিকে সরকার আগামী ৫ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়িয়েছে।

পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম কমেছে। বেড়েছে সবজি, মোটা দানার মসুর ডাল, শুকনা মরিচের দাম। চাল, ভোজ্যতেল, চিনি, মাছের দামও চড়া।

বাজারে এখন চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, শুকনা মরিচ, মাছ ও গরুর মাংসের দাম চড়া, যা আগে থেকেই মানুষের অস্বস্তির কারণ।

অনেকেই ত্রাণসহায়তা দিতে মসুর ডাল কিনছে। বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা দরে, যা রোজা শুরুর আগেও ৮০ টাকার আশপাশে এবং গত ডিসেম্বরে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ছিল।

মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের কাঁচাবাজারের খাদেম আড়ত নামের একটি মুদিদোকানের বিক্রেতা মোহাম্মদ সজীব বলেন, ‘মোটা দানার মসুর ডালের দামই সবচেয়ে বেশি। এটা কমছে না।’

রোজা শুরুর পর সবজির দাম বেড়েছে। মিরপুর ৬ নম্বর সেকশন কাঁচাবাজারে ঢাকার আশপাশ থেকে তাজা সবজি আসে। তাই দাম একটু বেশি থাকে। সেখানে বেশির ভাগ সবজির প্রতি কেজি দাম ৪০ থেকে ৭০ টাকা। লম্বা ও গোল বেগুন শুধু ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

প্রতি কেজি আমদানি করা ভালো মানের শুকনা মরিচ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, আর দেশি ভালো মানের মরিচ ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাবে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন আমদানি করা শুকনা মরিচের দাম ৭১ শতাংশ বেশি।

বাজারে ডিমই এখন একেবারে সস্তা। ভ্রাম‌্যমাণ বিক্রেতারা ঘুরে ঘুরে ফার্মের মুরগির ডিম ২৫ টাকা হালি দরে বিক্রি করছেন। ব্রয়লার মুরগিও বেশ কম দামে, ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

দুই কোম্পানির উদ্যোগ

দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় দুই শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই) ও সিটি গ্রুপ ঢাকায় সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের (এমআরপি) চেয়ে তুলনামূলক কম দামে বিভিন্ন পণ্য বিক্রির কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

সিটি গ্রুপ জানিয়েছে, তারা নিজেদের তীর ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনি ৬৫ টাকা ও অ্যাংকর ডাল ৪০ টাকা এবং পলি প্যাকে ১ লিটার সয়াবিন তেল ৯৩ টাকায় বিক্রি করছে।

মেঘনা জানিয়েছে, তারাও আগামীকাল শনিবার থেকে মোট ১৮টি পণ্য বিক্রি করবে। দাম রাখবে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের (এমআরপি) চেয়ে কম। এর মধ্যে তারা ফ্রেশ ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি চিনি ৬৫ টাকা, আটা ৩২ টাকা ও লবণ ২৫ টাকায় এবং ৫ লিটার তেল ৪৯০ টাকায় বিক্রি করবে।

এফ. কে.

FacebookTwitter