অনলাইনঃ
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করলেই যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হবে বিষয়টি সেরকম নয়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি আদৌ প্রয়োজন আছে কিনা সেটাও দেখতে হবে। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সমস্যাগুলো বহু পুরনো, সেই সমস্যা গুলোকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখিয়ে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার বহু চেষ্টা করেছে।
আজ সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির অডিটরিয়ামে তথ্যমন্ত্রীর পিতা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক জেলা পিপি এডভোকেট আলহাজ্ব নুরুচ্ছাফা তালুকদারের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্মরণসভা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক এডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুলের সভাপতিত্বে এবং এডভোকেট নিখিল কুমার নাথের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য এডভোকেট মো. দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ মোক্তার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মো. জিয়াউদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মুজিবুল হক, আ ক ম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ, আয়ুব খাঁন, অশোক কুমার দাশ, মহানগর পিপি এডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী, জেলা পিপি নাজমুল আহসান খাঁন। মরহুমের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন নুরুচ্ছাফা তালুকদারের সহধর্মিনী এডভোকেট কামরুননাহার বেগম।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দিতে চায়, সেটাকে বিএনপি আন্দোলনের বিজয় বলছে। যদি খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয় প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটা কি আন্দোলনের ফল নাকি মানবিকতা- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রথমত বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার কিংবা তার দল কারো পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানানো হয়নি। তারা মুক্তির কথাটা বলছেন টেলিভিশনের সামনে ও গণমাধ্যমে। আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি পরিবারের পক্ষ থেকে প্যারোলে হলেও তার মুক্তি চায়।
তিনি বলেন, প্যারোল হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থায় মুক্তি। বিভিন্ন বন্দিদের প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়। এটি কোনভাবেই আইনের মাধ্যমে মুক্তি নয়। এটি একটা প্রশাসনিক ব্যবস্থা। কারো নিকটাত্মীয় স্বজন মৃত্যুবরণ করলে বা অন্যকোন বিশেষ কারণে নানা সময় প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়। বেগম খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত কারণে প্যারোলে মুক্তি চান কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। তাদের দল বারবার বলছে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে।
গত ১১ বছরে বিএনপির পক্ষে কোন আন্দোলন করা সম্ভবপর হয়নি।
তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার কোন ক্ষমতা বিএনপির নাই। বেগম খালেদা জিয়া কোন রাজবন্দি নন। তাকে মুক্ত করতে হলে আইনের মাধ্যমেই মুক্ত করতে হবে। তারা যে প্যারোলের কথা বলছেন, তারা যখন আবেদন করবে তখনই শুধুমাত্র এটি নিয়ে কথা বলার সুযোগ তৈরি হবে, তার আগে নয়। তাদের পক্ষ থেকে তো এখনো প্যারোলে মুক্তির কোন আবেদন জানানো হয়নি।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৪ সালে যখন বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রধানমন্ত্রী তখন তার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং তার পুত্রের তত্ত্বাবধানে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। আর বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামী হিসেবে সাজা ভোগ করছেন। প্রধানমন্ত্রী যদি জিঘাংসার রাজনীতি করতেন তাহলে তিনি এখন কারাগারেই থাকতেন। তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকতেন না।
-বাসস