২০২০ সালে ২৫ লাখ ফ্রিজ বিক্রির টার্গেটে ওয়ালটন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ফ্রিজ বাজারে গত বছর ওয়ালটন গ্রুপ নিয়েছিল ‘১৯-এ ২০’ টার্গেট। অর্থাৎ ২০১৯ সালে ২০ লাখ ফ্রিজ বিক্রির চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল এ প্রতিষ্ঠানের দুই ব্র্যান্ড ওয়ালটন ও মার্সেল।

সেই লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিক্রি হয়েছে ২০ লাখ ৩০ হাজার ইউনিট ফ্রিজ। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর ২৫ লাখ ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি।

ফ্রিজ বিক্রয়ের এ সাফল্য উদযাপন উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি ২০২০) রাজধানীতে ওয়ালটনের করপোরেট অফিসে দিনব্যাপী ‘মেগা অ্যাচিভমেন্ট সেলিব্রেশন ও বেস্ট ব্র্যার্ন্ডিং অ্যাওয়ার্ড’ শীর্ষক এক প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে ২০২০ সালে ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্য ঘোষণা করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) এস এম আশরাফুল আলম।

তিনি নতুন এই টার্গেটের নাম দেন ‘২০-এ ২৫’।
অনুষ্ঠানে ফ্রিজ বিক্রিতে বিশেষ অবদানের মাধ্যমে ‘১৯-শে ২০’ সফল করায় ওয়ালটন ও মার্সেলের ৪২ জন কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

সেসময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম নুরুল আলম রেজভী, ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম, পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, মঞ্জুরুল আলম অভি, রাইসা সিগমা হিমা, মাহবুব আলম মৃদুল এবং রিফা তাসনিয়া স্বর্ণা।

দিনব্যাপী ওই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার ও আলমগীর আলম সরকার, বিপণন বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ইভা রেজওয়ানা, ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর মার্কেটিং নেটওয়ার্কের প্রধান মো. এমদাদুল হক সরকার, প্লাজা সেলস এন্ড ডেভলপমেন্ট বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ রায়হান, মার্সেলের হেড অব সেলস ড. মো. সাখাওয়াৎ হোসেন, নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহিদ হাসান, মো. হুমায়ুন কবীর, উদয় হাকিম, গোলাম মুর্শেদ, তানভীর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, কর্নেল (অব:) শাহাদাত হোসেন ও আমিন খান, ওয়ালটন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট এডওয়ার্ড কিম, ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. ফিরোজ আলমসহ প্রতিষ্ঠানের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ওয়ালটনের জন্য ২০১৯ সাল ছিল নতুন মাইলফলক অর্জনের চ্যালেঞ্জিং ইয়ার। এক বছরে ২০ লাখ ফ্রিজ বিক্রির পাশাপাশি বিশ্ব ইলেকট্রনিক্স বাজারে বাংলাদেশে তৈরি পণ্যকে শীর্ষস্থানে নিয়ে যেতে আমরা ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। ‘১৯ এ ২০’ চ্যালেঞ্জ অর্জনের ফলে আমরা আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী। আমাদের বিশ্বাস চলতি দশকেই বিশ্ব ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজারে ওয়ালটন সেরা গ্লোব্যাল ব্র্যান্ডে পরিণত হতে সক্ষম হবে।

তিনি জানান, ইতোমধ্যেই পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত হতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন পেয়েছে ওয়ালটন। তিনি বলেন, আইপিওতে আসার মাধ্যমে আমরা ওয়ালটনকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে পারবো। ফেব্রুয়ারি মাসেই বিডিং হবে।

এরপর আমরা বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের স্টক মার্কেটে যাবো। আমার বিশ্বাস দেশের শীর্ষ আইপিও কোম্পানি হবে ওয়ালটন।

ওয়ালটন ফ্রিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ জানান, ২০১৯ সালে আগের বছরের চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে তাদের।

তার মতে ফ্রিজ বিক্রিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে আকর্ষণীয় ডিজাইন ও ফিচারের নতুন নতুন মডেলের ফ্রিজ বাজারে ছাড়া, ডিজিটাল ক্যাম্পেইনে ক্রেতাদের দেয়া বিভিন্ন সুবিধা, সাশ্রয়ী মূল্য, কিস্তি সুবিধা, এক বছরের রিপ্লেসমেন্টসহ কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি, অনলাইনভিত্তিক সহজলভ্য বিক্রয়োত্তর সেবা ইত্যাদি।

তিনি আরো জানান, চলতি বছরের মার্চেই ওয়ালটন বাজারে নিয়ে আসছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বমান সম্পন্ন দেশে তৈরি প্রথম স্মার্ট ফ্রিজ। এরইমধ্যে বাণিজ্য মেলাসহ দেশের সব ওয়ালটন শোরুমে এই স্মার্ট ফ্রিজের প্রি- বুকিং শুরু হয়েছে। এতে গ্রাহকদের কাছ থেকে মিলছে আশাতীত সাড়া।

ওয়ালটন সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মান যাচাইকারি সংস্থা নাসদাত ইউনিভার্সাল টেস্টিং ল্যাব থেকে মান নিশ্চিত হয়ে ওয়ালটনের প্রতিটি ফ্রিজ বাজারে ছাড়া হচ্ছে। ওয়ালটন ফ্রিজের রয়েছে বিএসটিআইয়ের ফাইভ স্টার এনার্জি এফিশিয়েন্সি রেটিং। ফ্রিজ উৎপাদন ও রপ্তানিতে ওয়ালটন অর্জন করেছে আইএসও, ওএইচএসএএস, ইএমসি, সিবি, আরওএইচএস, এসএএসও, ইএসএমএ, ইসিএইচএ, জি-মার্ক, ই-মার্ক ইত্যাদি সার্টিফিকেট।

আন্তর্জাতিকমানের ওয়ালটন ফ্রিজ রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। দেশের ফ্রিজ বাজারে প্রায় ৭৫ শতাংশ মার্কেট শেয়ার রয়েছে ওয়ালটনের।

এছাড়া গত ডিসেম্বরে ষষ্ঠবারের মতো দেশের সেরা রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ডের মর্যাদাস্বরূপ ‘বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে ওয়ালটন।

দেশজুড়ে ওয়ালটনের রয়েছে ১৭ হাজারেরও বেশি শোরুম। যেখান থেকে ক্রেতারা চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী অসংখ্য মডেল ও ডিজাইনের ফস্ট, নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর এবং ফ্রিজার বা ডিপ ফ্রিজ থেকে পছন্দের পণ্যটি কিনতে পারছেন। এসব ফ্রিজের দাম ১০ হাজার থেকে ৬৯,৯০০ টাকার মধ্যে। ঘরে বসে অনলাইনের ইপ্লাজা.ওয়ালটনবিডি.কম (বঢ়ষধুধ.ধিষঃড়হনফ.পড়স) থেকে ফ্রিজসহ সব ধরনের ওয়ালটন পণ্য কেনা যাচ্ছে।

ফ্রিজে এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট সুবিধার পাশাপাশি কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি দিচ্ছে ওয়ালটন। দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে সারা দেশে রয়েছে ৭৩টি সার্ভিস পয়েন্ট।

-শিশির

FacebookTwitter