অর্থনীতিঃ
বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ উদ্বুদ্ধ করতে ও এর গভীরতা বৃদ্ধির জন্য দেশটির বিনিয়োগকারীদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নিতসু, জেত্রো, নিপ্পন স্টিল, সুমিতোমো, টেক্কেন, হোন্ডা ও সজিত করপোরেশনের মতো বড় বড় জাপানি কোম্পানি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সার্বিক খাতে বাংলাদেশে বিশাল বিনিয়োগ করবে।
ইতোমধেই এসব কোম্পানি স্বল্প পরিসরে দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। সামনে বড় আকারের বিনিয়োগ নিয়ে আসছে।
এই বিষয়ে জাপানের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে। খুব শিগগরই দুই দেশের প্রতিনিধিরা বসে বিনিয়োগের পরিমাণও নির্ধারণ হবে। জাপানের রাষ্ট্রদূত আজ বৃহৎ একটি টিম নিয়ে এসেছেন।
আমরা এতোগুলো জাপানি বিনিয়োগকারী এক সাথে কোনো দিন পায়নি। তারা সবাই এখানে এসেছে, তাদের একটাই উদ্দেশ্য আমরা সবাইকে চিনবো ও জানবো। চেনা ও জানার মাঝে আমাদের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারবো। আমাদের যে সমস্ত প্রকল্পগুলো আছে সেই সম্পর্কে জানলাম।
প্রকল্পগুলো কোন অবস্থায় আছে আমাদের করণীয় কি এবং তাদের করণীয় কি? শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে প্রায় সারাদিন ব্যাপী অর্থমন্ত্রী ও জাপানি রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো’র প্রতিনিধিদল পারস্পরিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে জাপানের প্রধান বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জাপান বাংলাদেশের পরিক্ষীত বন্ধু। জাতির পিতার হাত ধরেই জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। জাতির পিতার কন্যার হাত ধরে বাংলাদেশে বড় আকারে বিনিয়োগ করবে জাপানের বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশের অবকাঠামো ঠিক আছে। দুই দেশের প্রতিনিধিরা বসে বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।
জাপানের বিনিয়োগকারীরা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে এই বিষয়ে নানা উদ্যোগ নিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তারই হাত ধরে বড় আকারে বিনিয়োগ আসবে বাংলাদেশে।
তারা(জাপানি বিনিয়োগকারী) প্রতিশ্রুতবন্ধ তারা আমাদের সঙ্গে কাজ করবে। আমরাও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাদেরকে নিয়েই আমাদের যে স্বপ্ন আগামীর পথে এগিয়ে যাবো।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের আলোচনা ভালো হয়েছে সুন্দর হয়েছে। আমরা সামনে বিশদভাবে আরো এক অপরকে চিনতে ও জানতে পারবো সেই সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা অনেক বড় আকারে জাপানি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করি। জাপানি রাষ্ট্রদূত এর মধ্যে আরো মিটিং করেছেন। তিনি বহুবার বলেছেন আমাদের সকল অবকাঠামো ঠিক আছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনি নিজেও কাজ করছেন জাপানি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য। জাপানি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার জাপান সরকারের সাথে মিটিং করেছেন্। সেই ধারাবাহিকতায় আমি আশি করি আগামী দিনে অপ্রত্যাশিতভাবে দেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়বে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন জাপান যাবেন, অথবা জাপানের প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশে আসবেন সেই সময় বিনিয়োগ অংক নির্ধারিত হবে যে কি পরিমাণে বিনিয়োগ আমরা প্রত্যাশা করছি। আমাদের যে প্রকল্পগুলো জাপানের সঙ্গে আছে। সেগুলা সুন্দরমতো কাজ চলমান আছে। কাজের গতিও ভালো। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রকল্পগুলো শেষ হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল ও ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণসহ বেশ কিছু প্রকল্প চলমান আছে জাপানি অর্থায়নে।
এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন গতি দেখেই জাপানি বন্ধুরা সন্তুষ প্রকাশ করেছেন।মেগা প্রকল্পগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অফিস দেখাশুনা করে।
মাননীয় মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের ভবিষ্যতে অনেক বড় বিনিয়োগ দরকার। ঢাকার অদূর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ১ হাজার একর জমিতে গড়ে তোলা হবে জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল। ফলে দেশে জাপানী বিনিয়োগ বাড়বে।
জাপানী উদ্যোক্তরা এদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। এরই মধ্যে ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
অবশিষ্ট ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রথমিকভাবে ৫০০ একর জমি বরাদ্দের বিষয়ে চুক্তি হবে। পরবর্তীতে আরও ৫০০ একর জমি দেয়া হবে।
জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে কাধে কাঁধ রেখে কাজ করতে চায়। এই প্রকল্পে কোনো ধরণের সমস্যা হোক আমরা তা দেখতে চায় না। আমরা আগে থেকেই সাবধান।
আমরা সাবধানতা অবলম্বন করেই সামনে এগিয়ে যাবো। এই প্রকল্পে যেন কোন ধরণের সমস্যা না হয়। আর চলমান প্রকল্পগুলোতে কোনো ছোট খাট সমস্যা।
-শিশির