ডেস্ক রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ ৭ম জাতীয় যুব পরিবার পরিকল্পনা সম্মেলনের সমাপনী হয়েছে বুধবার। ১১ অক্টোবর সিরাক-বাংলাদেশ রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে সম্মেলনটি শুরু হয়ে দু’দিন ব্যাপী সম্মেলনটির আয়োজন করে সিরাক-বাংলাদেশ।
পাশাপাশি সহযোগী সংস্থা হিসেবে Foreign, Commonwealth, and Development Office (FCDO), USAID, বাংলাদেশ ইয়ুথ হেলথ অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (BYHAN), কোয়ালিশন অব ইয়ুথ অর্গানাইজেশনস ইন বাংলাদেশ (CYOB), জেপাইগো, আইপাস বাংলাদেশ, মেরি স্টোপস বাংলাদেশ, পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল এবং ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে।
প্রতিবারের ন্যায় আসছে বছর আরো বড় পরিসরে ‘৮ম জাতীয় যুব পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্মেলন ২০২৩’ আয়োজন করার অঙ্গীকারের মধ্যে দিয়ে সম্মেলনটির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
সিরাক-বাংলাদেশ ২০১৬ সাল হতে প্রতিবছর যুব পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্মেলনটি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, এবং প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সাথে নিয়ে আয়োজন করে আসছে ।
অনুষ্ঠানটিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নীতি নির্ধারক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, এবং পাঁচ শতাধিক কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণে, মূল প্রতিপাদ্য- “Innovate, Engage and Impact” এর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে, জেপাইগো এবং ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ সম্মিলিত হিউম্যান সেন্টার্ড ডিজাইন সেশনে সঞ্চালনায় ছিলেন জেপাইগো বাংলাদেশ এর ক্লিনিকাল ট্রেইনার ডা.বুশরা নুর।
এছাড়াও বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেপাইগো বাংলাদেশ এর কান্ট্রি লিড ডা. সেতারা রহমান, ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ এর টেকনিকfল অফিসার (পরিবার পরিকল্পনা) ডা. মো. আজাদ রহমান এবং মূল উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন জেপাইগোর প্রজেক্ট অফিসার নিনাদ আফরিন জোহোরা।
উক্ত সেশনে জেপাইগো বাংলাদেশ এর কান্ট্রি লিড ডা. সেতারা রহমান বলেন, “হিউম্যান সেন্টার্ড ডিজাইন” এর মূল বিষয় হলো প্রয়োজন অনুসারে চাহিদা পূরন করা, যার যে চাহিদা দরকার তাকে সেটা সরবরাহ করা।
দিবসের দ্বিতীয়ার্ধে মেরি স্টোপস বাংলাদেশ আয়োজিত আরেকটি সেশনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল সালাম খান, ইনোভেশন ফর মেন্টাল হেলথ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা মনিরা রহমান এবং সেশনটি সঞ্চালনা করেন মেরি স্টোপস বাংলাদেশ এর লিড অব অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড কমিউনিকেশন মনজুন নাহার।
এছাড়াও সেশনে তরুণ বক্তা হিসেবে ছিলেন ভলান্টিয়ার পিয়ার লিডার ইভা হোসাইন, ও কামরান মিয়া। সেশনে যুগ্ম সচিব মো. আব্দুস সালাম খান বলেন, যুব শক্তি হলো প্রাণ শক্তি, যুব সমাজই পারবে পরিবর্তন আনতে। সমাজের মানুষের চিন্তা ভাবনাও আমাদের পরিকল্পনায় আনতে হবে।
আরেকটি সেশনে স্বেচ্ছাসেবীদের সাথে নেটওয়ার্কিং সেশনে তরুণদের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়াতে ও যুব নেতৃত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে যুব কেন্দ্রিক সংস্থাগুলোর সাথে যুক্ত হওয়ার বিভিন্ন সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন সিরাক-বাংলাদেশ এর এসবিসিসি অফিসার মোঃ নাজমুল হাসান এবং কমিউনিকেশন ও আউটরিচ অফিসার মিজানুর রহমান আকন্দ।
যুব এবং সমণ্বিত যৌন শিক্ষা বিষয়ক একটি সেশন সঞ্চলনা করেন আইপাস বাংলাদেশ এর সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার ফারহানা জেসমিন হাসান। উক্ত সেশনে অতিথি বক্তা ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর পরিচালক এবং লাইন ডিরেক্টর আব্দুল লতিফ মোল্লা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার জীবনধারা, স্বাস্থ্য শিক্ষা মোঃ মোখলেছুর রহমান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর পরিচালক এম এ আখতার, আইপাস বাংলাদেশ এর ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর বুলি হাগিডোক, ভাওয়াল মির্জাপুর পাবলিক স্কুল (গাজীপুর) এর সহকারী শিক্ষক মোঃ তরিকুল ইসলাম পারভেজ এবং এর মুখ্য উপস্থাপক ছিলেন আইপাস বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সায়েদ রুবায়েত।
উক্ত সেশনটিতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর পরিচালক এবং লাইন ডিরেক্টর আব্দুল লতিফ মোল্লা তরুণদের সমন্বিত যৌন শিক্ষা সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদানের জন্য সম্পর্কিত অংশীজনদের উদ্যোগী হওয়ার পাশাপাশি কাজের দায়িত্ব বন্টন ও এর যথাযথ সমন্বয় সাধনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেশনের এক পর্যায়ে আইপাস বাংলাদেশ এর ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর বুলি হাগিডোক বলেন, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৩২ মিলিয়ন হচ্ছে যুবক যাদের শারীরিক, মানসিক এবং অন্যান্য সকল পর্যায়ের সেবা পাওয়ার অধিকার থাকলেও, মাঠ পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে যে বিভিন্ন কারনে সবাই উক্ত সেবার সুবিধা পাচ্ছে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পারিবারিক সমন্বয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
এডভোকেসি এবং স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন ফর চেঞ্জ বিষয়ক কর্মশালায় সিরাক-বাংলাদেশ এর প্রধান নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকত বলেন, যোগাযোগের ক্ষেত্রে তথ্য আদান-প্রদান হলেই তা সবসময় কার্যকরী হয় না।
কার্যকরী যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রথমত সেলফ কমিউনিকেশন, এবং এর বাহিরে কিছু নিয়ম নীতি অনুসরন করতে হয় যা কার্যকর যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা কর্মশালার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
অ্যাবস্ট্রাক্ট প্রেজেন্টর সাইফুল্লাহ খালিদ, চীফ ফিউচার মেকার অফিসার, হেল্প দ্যা ফিউচার, মোঃ আবু হোরায়রা , ঢাকা বিভাগীয় সমন্বয়ক, সিরাক-বাংলাদেশ এবং আতিকা রহমান চৌধুরী, শিক্ষার্থী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, তাদের তৈরীকৃত অ্যাবস্ট্রাক্ট প্রেজেন্ট করেন।
সেশনটির ফ্যাসিলিটের হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদিজা কালাম, এসবিসিসি অফিসার, সিরাক-বাংলাদেশ।
সমাপনী অধিবেশনে সিরাক- বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাসনিয়া আহমেদ এর সঞ্চালনায় অতিথি বক্তা হিসেবে ছিলেন মেরী স্টোপস বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর কিশওয়ার ইমদাদ, ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল হেলথ, জন্স হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অফ পাবলিক হেলথ এর সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ড. হালিদা হানুম আক্তার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় এর সহকারী অধ্যাপক ও অভিনেতা মনোজ প্রামাণিক, লাইন ডিজিএফপি-র লাইন ডিরেক্টর ডা. নুরুন নাহার বেগম এবং তরুণ বক্তা ফারজানা আক্তার রচনা।
-শিশির