রাজনীতিঃ
জিএম কাদেরের সঙ্গে তিনজন এমপি নেই দাবি করে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙা বলেছেন, আগামী ৩০ তারিখ সংসদে দেখা হবে, কার কি ক্ষমতা আছে তা বোঝা যাবে।
তিনি বলেন, রওশন এরশাদের চেয়ারের পাশে তিনি (জি এম কাদের) আর বসতে পারবেন না। রওশন এরশাদের পাশের চেয়ারে বসবেন অন্য কেউ। সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জি এম কাদেরের চেয়ার কেউ রক্ষা করতে পারবে না। ওই সময় পার্টি অফিস থেকে জি এম কাদেরকে জুতাপেটা করে তাড়ানো হবে।
জাতীয় পার্টি (জাপা) অফিস থেকে দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে ‘জুতাপেটা’ করে তাড়ানো হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ।
উপজেলা দিবস উপলক্ষে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে “পল্লীবন্ধু এরশাদ প্রতিষ্ঠিত উপজেলা থেকে প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন” শিরোনামে জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাঙা আরো বলেন, আগামী ২৬ নভেম্বর জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব পরিবর্তন হবে। সেখান থেকে বিদায় নেবেন জি এম কাদের। কাউন্সিলের আগেই এমপিরা কোন দিকে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ বিষয় নিয়ে আর সংশয় থাকবে না। সময়মতো আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছে যাবো। বনানী ও কাকরাইল অফিস আমাদের হবে। জি এম কাদেরকে জুতাপেটা করে ওখান থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে।
সরকারের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় জি এম কাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন মন্তব্য করে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বলেন, জি এম কাদের সাহেব আপনার কত টাকা প্রয়োজন? টাকাগুলো কী করছেন?’
রাঙা বলেন, জি এম কাদের কখনো রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি ছিলেন পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের একজন কর্মচারী। সেখান থেকে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন। পেট্রোলিয়াম করপোরেশন থেকে দুর্নীতির দায়ে তার চাকরি চলে যায়।
অথচ তিনি নিজেকে ক্লিন ইমেজ হিসেবে দাবি করেন। নামের পেছনে জনবন্ধু লেখেন। তার নির্বাচনী নিজ এলাকায় জনশত্রু হিসেবে পরিচিত।
জি এম কাদেরকে জাপার অবৈধ চেয়ারম্যান বলেও দাবি করেন রাঙা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে মনোনয়ন বাণিজ্য করছেন জি এম কাদের। সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫ কোটি করে টাকা নিচ্ছেন। আবার বিএনপির জোটে যাবেন, সে জন্য তাদের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবেন সেখান থেকেও টাকা নিচ্ছেন। দুই নৌকায় পা রেখে রাজনীতি হয় না। জি এম কাদের তাই করছেন।
রাঙা আরো বলেন, জি এম কাদের পল্লীবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে চান না। কারণ এরশাদ তাকে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে পাঁচবার বহিষ্কার করেছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকে পল্লীবন্ধুর চিহ্ন মুছে ফেলতে চায় সে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, জিএম কাদেরের চারপাশে রয়েছে চাটুকারের দল। তারা জাতীয় পার্টিকে বাণিজ্যের প্লাটফর্ম বানিয়েছেন। এই কালো থাবা থেকে জাতীয় পার্টিকে মুক্ত করতে হবে। জাপার দলীয় গঠনতন্ত্রে যেসব কালোধারা রয়েছে, তা সংশোধন করা হবে আগামী জাতীয় কাউন্সিলে। দল থেকে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের দলে ফিরিয়ে আনা হবে।
দলের সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা বলেন, বেগম রওশন এরশাদ দল সংস্কারের জন্য জাতীয় কাউন্সিল ডেকেছেন। আর জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে তার ‘পিতৃ সম্পত্তি’ পেয়েছে বলে মনে করেন। আসলে এটি তার পিতৃ সম্পত্তি নয়। এটি এরশাদের সম্পত্তি। ভাইয়ের সম্পত্তি কখনও ভাই পায় না। এরশাদ সাহেবের সম্পত্তি পাবেন তার স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ।
জাতীয় পার্টির সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএমএম আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, এমএ গোফরান, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু প্রমুখ।
-শিশির/প্রেস বিজ্ঞপ্তি