২৮ লক্ষ মেধাবীর বয়সের শিকল মুক্তির সমাবেশ অনুষ্ঠিত

২৮ লক্ষ মেধাবীর বয়সের শিকল হতে মুক্তির সমাবেশ
২৮ লক্ষ মেধাবীর বয়সের শিকল হতে মুক্তির সমাবেশ

শিক্ষাঃ
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ সহ যৌক্তিক ৪ দফা দাবি আদায় এবং প্রায় ২৮ লক্ষ মেধাবী শিক্ষার্থীদের বয়সের শিকল হতে মুক্তির লক্ষ্যে আজ ১৩ নভেম্বর ২০২০ইং শুক্রবার বিকাল ৪ টায় শাহবাগে শিকলবন্দি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে ছাত্রকল্যাণ পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মুজাম্মেল মিয়াজী বলেন, কর্মসংস্থান এবং চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ সহ ৪ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ অহিংস আন্দোলন করে আসছি এবং এখনও আমরা অহিংস পথেই আছি। এখন মুজিববর্ষ চলছে। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন এদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবেন এবং এটাও বলেছিলেন দাবি যদি ন্যায্য হয় এবং সংখ্যা যদি একজনও হয় তাহলে সে দাবিও মেনে নেওয়া হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে হলে দেশের সকল নাগরিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন। একই সাথে সেশনজট সহ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে যারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে করতে প্রায় ৩০ বছর পার করে ফেলেন সেই সকল মেধাবী শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রের উন্নতির প্রয়োজনে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করা একটি যৌক্তিক দাবি। যে সার্টিফিকেট অর্জন করতে ২৫-৩০ বছর সময় লেগে যায় সেই সার্টিফিকেটকে কিভাবে ৩০ এর শীকলে আটকে দিয়ে লক্ষ লক্ষ মেধাবী শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্র মেয়াদহীন ঘোষণা করে। এটা বড় ধরনের মানবতা অপরাধী কাজ। কি প্রয়োজন অনার্স মাষ্টার্স কিংবা উচ্চ শিক্ষা অর্জন করা যেইখানে ৩০ এর পর রাষ্ট্র ব্যবস্থা সবাইকে অযোগ্য ঘোষণা করে। অতীব দুঃখের বিষয় আমরা দীর্ঘদিন থেকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে প্রায় ৩০ লক্ষ শিক্ষিত সমাজের যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করে আসছি। সরকার আমাদের এই যৌক্তিক দাবিকে তোয়াক্কা না করে লক্ষ লক্ষ বেকার শিক্ষিত সমাজকে অপমান-অবহেলা-অবমাননা করেই আসছে। অথছ ক্ষমতা আসার আগে এই সরকারই কথা দিয়েছিল তাঁরা ক্ষমতায় আসলে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করবে। তিনি আরো বলেন-বাংলাদেশ গড় আয়ু বৃদ্ধির সাথে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বেড়েছে সেই হিসাবে ৪০ হওয়া কথা। আর আমরা চেয়েছি মাত্র ৩৫। বিশ্বের উন্নত উন্নয়নশীল ১৬২+ দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ এবং এর উর্ধ্বে সেইখানে বাংলাদেশে কেন ৩৫ হবে না?

লক্ষ লক্ষ মেধাবী শিক্ষার্থী ও যুব সমাজকে বয়সের শিকল হতে মুক্তি দিন। তাঁদেরকে দেশ জাতির সেবা করার সুযোগ দিন।

সংগঠনের আরেক প্রধান সমন্বয়ক সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, যদি মুজিববর্ষে মুজিবীয় আদর্শকে ধারণ করে স্ব-নির্ভর উন্নত বাংলাদেশ গঠন করতে হয় তবে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর প্রাণের যৌক্তিক দাবিসমূহ এই মুজিববর্ষেই মেনে নিতে হবে। এছাড়াও এই সরকার তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে রেখেছিল, তারা ক্ষমতায় আসলে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ সহ ৪ দফা বাস্তবায়ন করবে এবং ২০২১ সালের মধ্যে দেড় কোটি বেকারের শিক্ষিত সমাজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার পূরণের জন্য বিনীত আহ্বান জানাই। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষকে সফল করার উদ্দেশ্যে আমাদের যৌক্তিক দাবী অতিশীঘ্রই মেনে নিবেন।

বিশেষ দফা: কর্মসংস্থান চাই
যৌক্তিক ৪ দফা দাবিসমূহ:
১। চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীত করতে হবে।
২। অমানবিক আবেদন ফি কমিয়ে (৫০-১০০) টাকার মধ্যে নির্ধারণ করতে হবে।
৩। নিয়োগ পরীক্ষাগুলো জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে নিতে হবে।
৪। ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন সহ সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের প্রধান সম্বয়ক মুজাম্মেল মিয়াজীর সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মুসাদ্দেক আলীর সঞ্চালনায় শীকলবন্দি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এস এ সজীব আহমেদ,নাজিম উদ্দিন, রেশমা আক্তার, মাসুম বিল্লাহ্,শাহজাহান, জালাল প্রমুখ। উক্ত সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য প্রদান করে কোটা সংস্কার আন্দোলন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক এ পিএম সুহেল,সদস্য সচীব ইসমাইল সম্রাট এবং ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজের নেতা শুভ এবং যুব ফোরামের সাধারণ সম্পদাক মাহমুদুল্লাহৃ মধু সহ প্রমুখ নেতৃত্ববৃন্দ ।

-শিশির

FacebookTwitter