২২ তরুণ নেতৃবৃন্দকে ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান

২২ তরুণ নেতৃবৃন্দকে ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান
২২ তরুণ নেতৃবৃন্দকে ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড প্রদান

রাজনীতিঃ
আজ ২২ জন তরুণ রাজনৈতিক নেতাকে গ্রাজুয়েশন সার্টিফিকেট প্রদান করেছে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল।

ইউএসএআইডি এর অর্থায়নে স্ট্রেংদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ প্রকল্পের আওতায় ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম থেকে এই সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

ফেলোশিপ সার্টিফিকেট অর্জনকৃতরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল(বিএনপি) ও জাতীয় পার্টির তরুণ রাজনীতিবিদ।

১৯ তম ব্যাচের এই তরুণ নেতারা রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, নেতৃত্ব দক্ষতা, দ্বন্দ্ব নিরসন, এবং দল সুসংগঠিতকরণের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আয়োজিত চার মাসব্যাপী নিবিড় প্রশিক্ষণ সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন।

সেই সাথে তাঁরা তৃণমূলে বহুদলীয় উদ্যোগে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে এডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

এসপিএল প্রকল্পের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বাস্তবায়নে ও ইউএসএআইডি -এর অর্থায়নে আয়োজিত হয়।

এই ২২ জন তরুণ নেতাসহ এ পর্যন্ত ৪৬৬ ফেলো এই প্রোগ্রামের আওতায় গ্রাজুয়েশন অর্জন করেছেন।

এই প্লাটফরমটি তরুণ রাজনীতিবিদদের আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে সহায়তা করে এবং রাজনৈতিক নীতিনির্ধারক পর্যায়ে তাঁদের কণ্ঠস্বর পৌঁছানোর একটা স্থান তৈরি করে দেয়।

ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত ফেলোরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রকৃত সমাধানে অবদান রাখতে পারে।

এইভাবে, তাঁরা সারা দেশ জুড়ে গঠনমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চায় তাঁদের প্রতিশ্রুতির প্রদান করেন।

এই গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শ্রী সুজিত রায় নন্দী; বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন; জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান, এমপি; ইউএসএআইডি-এর অফিস অব ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস, এন্ড গভরনেন্স ডিরেক্টর ক্রিস্টিন ওয়ালস এবং এবং ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এল. ওল্ডস ফেলোদের মধ্যে ফেলোশিপ সনদপত্র বিতরণ করেন।

রাজনীতিতে নারী ও তরুণ নেতৃত্বের তাৎপর্যপূর্ণ ভুমিকার ওপর গুরুত্ব দিয়ে, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বলেন, ‘ একটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে সেই দেশটির তরুণদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও ইতিবাচক উদ্যোগের ওপর।

একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে তাদের উচিত দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং মানুষের জন্য কাজ করা।

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ শত্রু নয়। তরুণরা হতে পারে রাজনৈতিক সম্প্রীতির অগ্রগামী শক্তি। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বাস্তববাদী এবং সহানুভূতিশীল তরুণ রাজনৈতিক নেতাদের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখছে।

আমরা রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে নারী ও তরুণদের ক্ষমতায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েটকৃত ফেলোরা ফেলোশিপ প্রশিক্ষণ থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন শিক্ষণীয় বিষয়ে তাঁদের মূল্যবান অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

ফেলোশিপ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের ফলে তাঁরা কিভাবে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারেন এবং একটি সহনশীল সমাজ গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক চর্চার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারেন সে প্রসঙ্গে আলোচনা করেন।

পরবর্তীতে তাঁরা তরুণদের রাজনীতি অনীহা দূরীকরণে রাজনৈতিক দলগুলোর জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ তুলে ধরেন।

তরুণদের রাজনীতিতে আগ্রহী করে তুলতে ফেলোরা দলীয় গঠনতন্ত্রের সঠিক চর্চা, মেধাবী তরুণদের জন্য ক্যাম্পাসভিত্তিক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, তরুণদের নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া, তরুণদের মতামত প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করা, রাজনৈতিক দলগুলোর ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে তরুণদের ধারণা দেয়ার ওপর গুরুত্ব দেন।

এই সুপারিশসমুহের ভিত্তিতে ফেলোরা তরুণদের রাজনীতিতে অনীহার এই চক্রকে ভাঙ্গতে একটি বার্ষিক পরিকল্পনা তৈরি করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি ডানা এল. ওল্ডস বলেন, ‘ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনারা স্যানিটেশন উন্নতকরণ থেকে সেতু নির্মাণ – এ ধরনের বিভিন্ন স্থানীয় সমস্যা সমাধানে একসাথে কাজ করেছেন।

তবে এই প্রোগ্রাম চলাকালীন নির্মিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি হল ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরুণ নেতাদের মধ্যে বন্ধুত্ব।’

ইউএসএআইডি সম্পর্কে: ১৯৭১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে বাংলাদেশকে আট’শ কোটি ডলারেরও বেশি উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করেছে।

শুধু গত বছরই ইউএসএআইডি বাংলাদেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে প্রায় ২০ কোটি ডলার প্রদান করেছে।

ইউএসএআইডি বাংলাদেশে যে সকল কর্মসূচিতে সহায়তা প্রদান করে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে – গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও অনুশীলনের প্রসার, খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুবিধাদির সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবার উন্নয়ন ও অভিযোজন, এবং স্বল্প কার্বন উন্নয়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো।

-শিশির

FacebookTwitter