অর্থনীতিঃ
বিশ্বব্যাপী শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সহায়তায় ২০২১ অর্থ বছরে চাঙ্গা হয়য়ে উঠা আর ২০২২ সালে অসাধারণ প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশের অর্থনীতি- সম্প্রতি দুবাইয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক আয়োজিত এক ইনভেস্ট রোডশো’তে বক্তব্য প্রদানকালে এমনটাই মন্তব্য করেছেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর শীর্ষ অর্থনীতিবিদগণ।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর সহযোগিতায় আয়োজিত অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট উপস্থাপন অধিবেশন চলাকালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর আসিয়ান অ্যান্ড সাউথ এশিয়া-এর চিফ ইকোনমিস্ট এডওয়ার্ড লী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

একই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের দৃষ্টিভঙ্গীসমূহ তুলে ধরেন দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিবিদ সৌরভ আনন্দ।

ব্যাংকসমূহের বিশ্লেষণ দেখা গিয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারীর আঘাতে অর্থনৈতিক অগ্রগতি যখন বিগত কয়েক দশকের তুলনায় অনেক ধীরগতির হয়ে গেছে, তখনও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে তা ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করতে যাচ্ছে। মহামারীর ধাক্কা থেকে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করেছে সরকারের আর্থিক প্রণোদনা এবং স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতি।

রোডশো-এর প্রথম দিনের বক্তব্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, “বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম সেরা অর্থনীতির দেশ। যেখানে বাংলাদেশের জিডিপি ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হতে সময় লেগেছে ৩৬ বছর, সেখানে দেশের জিডিপি ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৩৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে মাত্র ১২ বছরে। বর্তমান সরকারের অধীনে আগের ২০০৮ সালের তুলনায় নমিনাল জিডিপি বেড়েছে ৩ ধাপে মাত্র এক তৃতীয়াংশ সময়ে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। ক্রমবর্ধমান ভোক্তা ব্যয়, উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, সামাজিক সূচকে টেকসই অগ্রগতি, দেশীয় উত্পাদনে পরিচালিত একটি দ্রুত বর্ধমান শিল্প খাত এবং ক্রমবর্ধমান রফতানি আমাদের অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে গতিশীল করে তুলেছে।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণের পরিশ্রম ও প্রথমসারির যোদ্ধাদের সাহসিকতার সাথে সরকারের সময়োপযোগী ও বিচক্ষণ প্রচেষ্টা যুক্ত হয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। অর্থনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী’র কার্যালয়, মন্ত্রীসভা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বিএসইসি, বিডা, বেজা সহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলাম-এর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমাদের দেশের পুঁজিবাজার প্রশংসনীয়ভাবে পরিচালিত করছে বিএসইসি, যা ভবিষ্যতে দেশের মজবুত অর্থনীতির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশ বাংলাদেশ এবং তাই এটাই সঠিক সময় বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার।”

অধিবেশনের প্যানেলিস্ট হিসেবে হেড অব ফাইনান্সিয়াল মার্কেট আলমগীর মোরশেদ বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন এবং বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারিদের উতসাহী করার লক্ষ্যে গৃহীত নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলেন।

“সুকুক: দ্য নিউ ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটি ইন বাংলাদেশ” অধিবেশনে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর ইসলামিক অরিজিনেশন হেড আলী হসান সুকুক ও এর সম্ভাবনা বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

একই অধিবেশনে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর ক্যাপিটাল মার্কেটস হেড মারুফ উর রহমান প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন।

“দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটস” শীর্ষক রোডশো’টি ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী, বিদেশী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারি এবং বিনিয়োগকারিদের ছোট ছোট দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা, বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা ও তার প্রাপ্যতা ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয়।

-শিশির

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily